এল নিনোর রেখে যাওয়া ঘাটতি কি মিটিয়ে দিতে পারবে আসন্ন লা নিনার বৃষ্টি ? বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক - Weather of West Bengal

My weather, my bengal.

Tuesday, July 02, 2024

এল নিনোর রেখে যাওয়া ঘাটতি কি মিটিয়ে দিতে পারবে আসন্ন লা নিনার বৃষ্টি ? বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক

 


☀ এল নিন রেখে যাওয়া ঘাটতি কি মিটবে বর্ষার শেষে লা নীনার আগমনে ? আসুন জেনে নেওয়া যাক সব এক নজরে⛈  - 


এল নিনো ও লা নিনা এই শব্দ দুটি স্প্যানিশ শব্দ যার অর্থ দুষ্টু ছেলে ও শান্ত মেয়ে অর্থাৎ এই দুটি শব্দ অস্থিরতাকে ও স্থিরতাকে প্রকাশ করে | পেরুর নাবিকগণ পেরু উপকূলে সমুদ্র জলের উষ্ণতার তারতম্য অনুযায়ী এই শব্দ দুটি প্রচলন করেন |


সাধারণত পেরু উপকূলে কুমেরু মহাসাগর থেকে শীতল জলস্রোতের প্রভাবে সে অংশে প্রশান্ত মহাসাগরের জলতল সাধারণত ঠান্ডা থাকে |


লা নিনা অবস্থাতে সাধারণত পেরু উপকূলে সমুদ্রের জলের তাপমাত্রা স্বাভাবিকভাবে ঠান্ডা থাকে এবং ইন্দোনেশিয়ার কাছে তা গরম থাকে এর ফলে পেরু উপকূলের উপরে উচ্চচাপের অবস্থান জনিত কারণে পরিষ্কার আকাশ ও ইন্দোনেশিয়ার ওপরে নিম্নচাপের অবস্থানজনিত কারণে বজ্রবিদ্যুৎসহ ঝড় বৃষ্টি হয় | এই পর্যায়ে সাধারণত প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে জোরালো পূবালী বাতাসের জেড়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং সংলগ্ন অঞ্চলে  প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় যার ইতিবাচক প্রভাব পশ্চিমবঙ্গের ওপরে পরে | লা নিনা বছরে সাধারণত এ কারণে শীত ও স্বাভাবিক বা তার একটু বেশিই পড়ে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে তবে সাধারণত এর ফলে বাতাসে দূষণ মাত্রা বেড়ে যায় |



এল নিনো পরিস্থিতি এর ঠিক বিপরীত অবস্থা অর্থাৎ পেরু উপকূলের সমুদ্র জল গরম থাকার কারণে সেই অঞ্চলে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয় এবং সেখান থেকে পেরু ও সংলগ্ন আটাকামা মরুভূমিতে স্বাভাবিকের থেকে বেশি বৃষ্টিপাত হয়,  অপরদিকে ইন্দোনেশিয়ার ওপরে সমুদ্র যাতে তাপমাত্রা ঠান্ডা থাকার কারনে উচ্চচাপ সৃষ্টি হয় যার ফলে প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম দিক থেকে পূর্ব দিকে জোরালো পশ্চিমা বাতাস প্রবাহিত হয় | এর নেতিবাচক পড়ে ভারতীয় মহাসাগরের মৌসুমি বায়ু প্রবাহের উপরে,  মৌসুমী বায়ু প্রবাহ দ্বারা বয়ে আনা সমস্ত বৃষ্টির মেঘ সেই পশ্চিমা বাতাসের দ্বারা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ছেড়ে দক্ষিণ আমেরিকার দিকে প্রবাহিত হয় যার ফলে বর্ষাকালে ভারতের গাঙ্গেয় সমভূমিতে দীর্ঘকাল ব্যাপী অনাবৃষ্টি পরিলক্ষিত হয় এবং তার নেতিবাচক পরে পশ্চিমবঙ্গেও যার ফলে যার পশ্চিমবঙ্গের কৃষি ব্যবস্থা এবং তার উপরে দাঁড়িয়ে থাকা অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে গভীরভাবে প্রবাহিত করে। 




মে মাসের শেষে চলে যাওয়া এল নিনোর প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চল ঘাটটির সম্মুখীন হয় | উত্তরবঙ্গের পার্বত্য এবং সংলগ্ন জেলাগুলি ছাড়া পশ্চিমবঙ্গের বাকি সমগ্র বৃষ্টির ঘাটতি দেখা যায় | সম্প্রতি এর নিনা শেষ হলেও যেহেতু এটি পৃথিবীর অনেক বড় অংশ জুড়ে হয় তাই এর প্রভাব শেষ হতে দু এক মাস সময় লেগে যায় যার ফলেই এই অনাবৃষ্টি দেখা যায় | জুলাই মাসে সদ্য শেষ হয়ে যাওয়া এল নিনোর প্রভাবে বৃষ্টি কম হতে পারে পশ্চিমবঙ্গে যার ফলে বিপুল ঘাটতি সম্মুখীন হতে পারে পশ্চিমবঙ্গ  |  তবে বর্ষার দ্বিতীয় পর্যায়ে অর্থাৎ আগস্ট এবং সেপ্টেম্বর মাসে কিছুটা লা নিনা পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে যার ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে পারে একের পর এক নিম্নচাপ এবং এর রেশ চলতে পারে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ অব্দি যার ফলে পশ্চিমবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে স্বাভাবিক এর চেয়ে বেশি বৃষ্টি হতে পারে, বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গে | এর ফলে জুন ও জুলাই মাসে তৈরি হওয়া বিপুল পরিমাণ বর্ষার ঘাটতি কিছুটা হলেও মিটতে পারে আগস্ট সেপ্টেম্বর মাসে নিম্নচাপ থেকে প্রাপ্ত বৃষ্টি থেকে | তবে এই অতিবৃষ্টি বন্যার সৃষ্টি করতে পারে কিছু কিছু অংশে যা সমস্যা এনে দিতে পারে বাংলার কৃষকদের |  তবে কি হতে চলেছে তার উপর আমাদের চোখ সর্বদা থাকবে


এরকমই আবহাওয়া সম্পর্কিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সহজ ভাবে বুঝতে জুড়ে থাকুন আমাদের সাথে সর্বদা |

No comments:

Post a Comment