নিজস্ব সংবাদদাতা: বিগত ব্লগে আলোচনা করেছিলাম বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় ফাইলিন সম্পর্কে। ঘূর্ণিঝড় ফাইলিন ২০১৩ সালের ১২ ই অক্টোবর ওড়িশার গোপালপুরে আছড়ে পড়েছিল। আজ আলোচনা করব 12 ই অক্টোবর অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমে আছড়ে পড়া বিধ্বংসী ক্যাটেগরি ৪ ঘূর্ণিঝড় হুদহুদ সম্পর্কে এই হুদহুদ নামকরণটি করেছিল ওমান ঘূর্ণিঝড় হুদহুদ নামের অর্থ হল এমন একটি পাখি যার মাথায় বর্ণময় ঝুটি আছে এই বর্ণময় ঝুটি পাখিটিকে এক আলাদা নৈসর্গিক সৌন্দর্য দান করে ও হুদহুদ হল এমন একটি পাখি যা ইসলাম নবী সুলেমানের দূত হিসাবে পরিচিত বার্তা বাহক হিসাবে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে বার্তা পৌঁছে দেওয়ার কাজে হুদহুদ ব্যবহৃত হত। হুদহুদ নবী সুলেমান ও শেবার রাণীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বার্তাবাহক হিসাবে কাজ করতো সুন্দর দেখতে বর্ণ ময় চঞ্চল পাখিটির ইংরেজি নাম হুপি। পাখিটি যথেষ্ট বুদ্ধিমান ও চঞ্চল এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ঋতুগত বৈচিত্রের মধ্যে দিয়ে যাযাবর জীবনযাপন করে থাকে।। পাখিটি বাংলায় মোহনচূর নামে পরিচিত তার বর্ণময় উজ্জ্বল মুকুটের জন্য পাখিটি পাওয়া যায় আফ্রিকা ইউরোপ ও এশিয়া মহাদেশে। ইসলাম সাহিত্যে পাখিটিকে পাখিদের রাজা বলে গণ্য করা হয়। ভারতেও এমনকি বাংলাদেশেও মোহনচুর পাখির অস্তিত্ব দেখা যায়। ২০১৪ সালের ১২ ই অক্টোবর অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনাম ও লাগোয়া উপকূল ভাগে আছড়ে পড়া বিধ্বংসী ক্যাটাগরি চার মাত্রার ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করেছিল পাকিস্থান হুদহুদ পাখির নামকরণে। সাতই অক্টোবরের আশেপাশে আন্দামান সাগরে একটি নিম্নচাপ তৈরি হয়েছিল। যা পরবর্তী পর্যায়ে দশই অক্টোবরে আশেপাশে। শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেয় এবং পরবর্তী পর্যায়ে অত্যন্ত বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় হিসাবে অন্ধ্রপ্রদেশে ১২ ই অক্টোবর আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড়টি ভারতীয় মৌসুম বিভাগের শ্রেণিবিভাগ অনুযায়ী এক্সট্রেমলি সিভিয়ার সাইক্লোন হিসাবে এবং জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টারের প্রদত্ত মত অনুযায়ী ক্যাটেগরি চার মাত্রার ঘূর্ণিঝড় হিসাবে আছড়ে পড়ে। স্থলভাগ অতিক্রমের সময় ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের গতি ছিল প্রায় ১৮৫ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় যা সর্বোচ্চ বাতাসের ঝাপটা ২১৫ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছিল এই ঘূর্ণিঝড়টি অন্ধ্রপ্রদেশে আছড়ে পড়ার পর অন্ধ্রপ্রদেশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি চালিয়েছিল ঘূর্ণিঝড়টি অন্ধ্রপ্রদেশ অতিক্রমের পর উত্তর দিকে অগ্রসর হয়েছিল। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়েছিল অন্ধ্রপ্রদেশ ওড়িশা ঝাড়খন্ড ছত্রিশগড় ও গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে এই ঘূর্ণিঝড়ের সরাসরি প্রভাব না পড়লেও ঘূর্ণিঝড়ের পরোক্ষ প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি হয়েছিল সবথেকে মজার কথা এই ঘূর্ণিঝড়টি চলে যাওয়ার পর অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যে দীর্ঘ সময় ব্যাপী বৃষ্টি হীনতা ও অস্বাভাবিক উত্তাপ দেখা দিয়েছিল ঘূর্ণিঝড় হুদহুদ বায়ুপ্রবাহের প্রকৃতি পরিবর্তন করে দিয়েছিল যার জন্য আবহাওয়ার মধ্যে বিরাট পরিবর্তন চলে এসেছিল যা দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব রেখেছিল অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যে ঘূর্ণিঝড়ের ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করে দেখা যাচ্ছে বেশ বড় বড় ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়েছিল ১২ ই অক্টোবরে, ঘূর্ণিঝড় ফাইলিন ঘূর্ণিঝড় হুদহুদ ২০১৭ অতি গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড় তিতলি সবই আট থেকে ১৪ই অক্টোবর এর মধ্যে আছড়ে পড়েছিল ভারতের পূর্ব উপকূলে। বিশেষত ২০১৩ ও ২০১৪ সালে কাকতালীয়ভাবে 12 ই অক্টোবর বড় বড় দুটি ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ে ভারতের পূর্ব উপকূলে একটির দ্বারা প্রভাবিত হয় উড়িষ্যা এবং অপরটির দ্বারা প্রভাবিত হয় অন্ধ্রপ্রদেশ তাই ২০২৪ সালে দুর্গা পুজো বলাই যায় ইতিহাস ঘেঁটে বড় বড় ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার সময় পড়েছে আবার ২০২৪ সালে লালিনা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার কারণে বঙ্গোপসাগরের জলতল তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকবে এবং উইণ্ড শেয়ার কম থাকবে তাই পুজোর প্রাক্কালে সিস্টেমের সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে।
Weather of West Bengal
6/8/2024 (Night)
No comments:
Post a Comment