নমস্কার আপনাদের সকলকে ওয়েদার অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল এ স্বাগত জানাই...
দক্ষিণবঙ্গের আকাশ গত কয়েকদিন ধরেই কালো মেঘে ঢাকা। আজ প্রায় সারাদিনই দক্ষিণবঙ্গের ওপর একটি সক্রিয় নিম্নচাপ অবস্থান করছে যা গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের ওপর স্থিত হয়ে প্রবল বৃষ্টি এবং দমকা হাওয়া নিয়ে আসছে।এই নিম্নচাপটি বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ সীমান্ত হয়ে দক্ষিণবঙ্গে প্রবেশ করে সক্রিয় হয়েছে এবং এর প্রভাবে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনা, নদীয়া এবং মুর্শিদাবাদ সহ বিভিন্ন জেলায় আজও মাঝারি থেকে ভারী আবার কখনো বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি লক্ষ্য করা গেছে।
গতকাল রাত থেকেই কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় অবিরাম বৃষ্টি হচ্ছে, ফলে নিচু অঞ্চলে জল জমে গিয়েছে এবং যানজটের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সকাল থেকে একটানা বৃষ্টিতে জনজীবন কিছুটা ব্যাহত হলেও চাষের জন্য এটি যথেষ্ট উপকারী বৃষ্টি। বিশেষ করে আমন চাষের জন্য এই নিম্নচাপের বৃষ্টি কৃষকদের মুখে স্বস্তি এনে দিয়েছে।
এই নিম্নচাপটি বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের ওপরে অবস্থান করলেও পরবর্তী ক্ষেত্রে এটি দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিমী জেলাগুলির উপর দিয়ে গিয়ে ঝাড়খন্ড ও তার তৎসংলগ্ন অঞ্চলে অবস্থান করার সম্ভাবনা রয়েছে।এই নিম্নচাপের প্রভাবে বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ৩০-৪০ কিমি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে এবং সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে দমকা হাওয়া সহ মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাও রয়েছে। তাই মৎস্যজীবীদের জন্য সতর্কবার্তা জারি করা হচ্ছে এবং আগামী ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। উপকূলবর্তী অঞ্চলে ২-৩ মিটার উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা যাচ্ছে।
নিম্নচাপের ফলে তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। কলকাতায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা আজ ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি রেকর্ড করা হয়েছে, যা স্বাভাবিকের তুলনায় ৩-৪ ডিগ্রি কম। আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় গরমের অস্বস্তি থাকলেও বৃষ্টির কারণে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে।
তবে এই বৃষ্টির ফলে শহর এবং গ্রামের রাস্তায় কাদার সমস্যা তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে গাছ পড়ে যাওয়ার এবং বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনা ঘটছে। পুরসভা এবং বিদ্যুৎ বিভাগের তরফ থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য কাজ শুরু হয়েছে।
আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিম্নচাপটি ধীরে ধীরে উত্তর-পশ্চিম দিকে সরে যাবে এবং দুর্বল হয়ে যাবে, ফলে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির প্রকোপ কিছুটা কমবে। তবে বর্তমান নিম্নচাপের প্রভাবে ও মৌসুমী অক্ষরেখার অবস্থানের ফলে আগামী ২-৩ দিন বিক্ষিপ্ত হালকা থেকে মাঝারি বা কোন কোন স্থানে অস্থায়ী ভারী বৃষ্টি চলতেই থাকবে। এই সময় বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সময় খোলা জায়গায় না থাকার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
বলাবাহুল্য, দক্ষিণবঙ্গের এই নিম্নচাপ কৃষকদের জন্য যেমন আশীর্বাদ, তেমনি শহুরে জনজীবনে কিছুটা সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সঠিক সচেতনতা এবং সতর্কতাই এই অবস্থার মধ্যে নিরাপদে থাকার একমাত্র উপায়।
আবহাওয়া সংক্রান্ত আরো তথ্য জানতে অবশ্যই চোখ রাখুন আমাদের ওয়েদার অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল ফেসবুক পেজটিতে।
নমস্কার🙏
No comments:
Post a Comment