পূর্বাভাস ছিল দক্ষিণে বাড়বে বৃষ্টির দাপট। ভিজবে বর্ষার বৃষ্টিতে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকা। কিন্তু মেঘলা থাকার সত্বেও বৃষ্টি পেলনা কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকা। তার জায়গায় আদ্র অসস্তিকর গরম থাবা বসিয়েছে আজো দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জায়গায়। তবে
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের পরিস্থিতি আলাদা
হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিতে ভিজছে হচ্ছে ভারী বৃষ্টিও। আমবাঙালির মনে একটাই প্রশ্ন বিশেষ করে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় থাকা মানুষদের। " আমরা কি বর্ষার ঝেঁপে বৃষ্টি পাবোনা, পাবোনা ঝেঁপে বৃষ্টি "?? আর এই অসস্তি ভাবটা কেন হচ্ছে ?? প্যাচপ্যাচে গরমে
নাজেহাল হচ্ছি কেন ?? এই প্রশ্নের উত্তরে ওয়েদার অফ ওয়েস্টবেঙ্গল জানাচ্ছে আমাদের
ঝেঁপে বৃষ্টি আপাতত টেনে নিয়েছে উত্তরবঙ্গ
৪৮-৭২ ঘণ্টার মধ্যে উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু জায়গায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও হতে পারে প্রবল বৃষ্টি। দার্জিলিং, জলপাইগুুড়়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, দিনাজপুর, মালদা প্রভৃতি অঞ্চলে ভালোই বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এমনকি কোথাও কোথাও হতে পারে অতিভারী বৃষ্টি উত্তরবঙ্গ ও উত্তর-পূর্ব ভারতে। আকাশ থাকবে মেঘাচ্ছন্ন। মেঘাচ্ছন্নতার কারণে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কম থাকবে। উত্তর বাংলাদেশের রঙপুর, রাজশাহী , সিলেট, ময়মনসিংহ, ঢাকা প্রভৃতি অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কোথাও কোথাও প্রবল বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টি হতে পারে উত্তর পূর্ব ভারতে।
উত্তরবঙ্গ কিভাবে দক্ষিণবঙ্গ থেকে বৃষ্টি টেনে নিচ্ছে সেটা দেখা যাক ।
একসঙ্গে তিনটি ঘূর্ণাবর্তকে যুক্ত করেছে। একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে উত্তরপ্রদেশ-বিহার ও সংলগ্ন এলাকায়। অপর ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে উত্তরবঙ্গ ও সংলগ্ন উত্তর পশ্চিম বাংলাদেশের উপর। অপর একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে উত্তর পূর্ব ভারতের উপর। এরফলে বৃষ্টি বেড়েছে উত্তরবঙ্গ ও উত্তর-পূর্ব ভারতে এবং বাংলাদেশের উত্তর ও উত্তর পূর্ব দিকে। কেন দেওয়া হয়েছিল কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা??
একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছিল বাংলাদেশ উপকূলীয় এলাকায়। এই ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে ভালো বৃষ্টি নেমেছিল বাংলাদেশ উপকূলীয় এলাকায়। আশা করা হচ্ছিল এই ঘূর্ণাবর্ত গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন এলাকা দিয়ে উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে। কিন্তু ঘূর্ণাবর্ত বাংলাদেশের উপর যথেষ্ট উত্তরদিকে উঠে বর্তমানে বাংলাদেশের রাজশাহী, রঙপুর ও সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গের উপর অবস্থান করছে। অন্যদিকে উত্তরবঙ্গের উপর দিয়ে প্রবাহিত অক্ষরেখা শক্তিশালী রয়েছে। তাই আগামী ৪৮-৭২ ঘণ্টার মধ্যে উত্তরবঙ্গের ও উত্তর পূর্ব ভারত ও বাংলাদেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে ভালোই বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের উপর দিয়েও একটি
অক্ষরেখার শাখা বিস্তৃত হয়েছে। এরপ্রভাবে ও সাগর থেকে জলীয় বাষ্প প্রবেশ করায় উপকূলীয় এলাকায় মেঘ তৈরি হচ্ছে। আর অক্ষরেখার প্রভাবে ঘর্মাক্ত অসস্তিকর ভ্যাপসা গরম অনুভব হচ্ছে। আর অন্যদিকে যা বৃষ্টির বেশিরভাগ পাচ্ছে উত্তরবঙ্গ। বর্তমান সময় থেকে ৪৮ -৭২ ঘণ্টার মধ্যে আকাশ আংশিক থেকে সম্পূর্ণ মেঘাচ্ছন্ন থাকতে পারে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে। আদ্র ও অসস্তিকর ভ্যাপসা পরিবেশ কিছুটা বজায় থাকতে পারে। এই সময়ের মধ্যে কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি ও কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আশার কথা
আগামী ৭২-৯৬ ঘণ্টার মধ্যে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ
, ঝাড়খণ্ড বা সংলগ্ন এলাকায় একটি শক্তিশালী ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হতে পারে। এরপ্রভাবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু জায়গায় বৃষ্টির পরিমান
বাড়ার একটা সম্ভাবনা রয়েছে। তখন দক্ষিণবঙ্গের উপর অক্ষরেখা সক্রিয় হওয়ার প্রবণতা বাড়তে পারে। তবে আগামী ৪৮-৭২ ঘণ্টার মধ্যে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের
খুলনা বরিশাল ও চট্টগ্রামের বেশ কিছু জায়গায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কোথাও কোথাও সক্রিয় মৌসুমী সার্জ গঠনের জন্য ভালো বৃষ্টিও সম্ভাবনা রয়েছে।
পূর্বাভাস প্রদানকারী:অর্ঘ্য বটব্যাল।
তারিখ: ১৮.৬.২০
সময়: রাত ৯.৫১ মিনিট।
No comments:
Post a Comment