ওয়েদার অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল এর তরফ থেকে প্রতি বছরের মতো এ বছরও ২০২০ সালের বর্ষার দীর্ঘমেয়াদী আবহাওয়ার পূর্বাভাস প্রকাশিত করা হচ্ছে।
দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ু অর্থাৎ বর্ষা ভারতের জলবায়ুতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভারতের ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী এবং জলবায়ু অনুযায়ী বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত সমগ্র দেশে জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই পরিলক্ষিত হয়।
আর এই বৃষ্টিপাত কে কেন্দ্র করে ভারতের কৃষিকাজ খুবই বড় ভূমিকা পালন করে। ভারতের অর্থনীতির একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে এই কৃষিকাজ। তাই সবার চোখে এই বর্ষার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সমগ্র বিশ্বে বর্তমানে করণা মহামারীর পরিস্থিতিতে বিশ্বের অর্থনীতি খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। তার মধ্যে ভারতের অর্থনীতি ও বর্তমানে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
তাই এখন অন্যান্য শিল্প-বাণিজ্য তুলনায় অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং দরকারী হয়ে উঠেছে কৃষি ক্ষেত্র। যার মাধ্যমে ভারতের আর্থিক ক্ষতি আটকাতে সক্ষম হতে পারে।
আর এই কৃষি ক্ষেত্র অধিকাংশ নির্ভর করে এই বর্ষার বৃষ্টিপাতের ওপর। জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৃষ্টিপাত এবং তার সঠিক বন্টন হওয়া অত্যন্ত আবশ্যক। তাই এই বছর ও অন্যান্য বছরের মতো দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ু অর্থাৎ বর্ষার অগ্রিম এবং দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাস করা হচ্ছে বর্তমান কৃষিকার্য এবং পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে।
ওয়েদার অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর পূর্বাভাস করতে গিয়ে সমস্ত রকম ঐতিহাসিক তথ্য নিরীক্ষণ, বর্তমান আবহাওয়া পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, তথ্য বিশ্লেষণ, এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আবহাওয়া মডেল, মহাসাগরীয় জলের তাপমাত্রা এবং বায়ুপ্রবাহ ওপর সর্বদা নজর রেখেই পূর্বাভাস করা হচ্ছে।
২০২০ সালের দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ু অর্থাৎ বর্ষা ইতিমধ্যেই পয়লা জুন ভারতের মূল ভূখণ্ডের অর্থাৎ কেরলে প্রবেশ করেছে।
কিন্তু ঘূর্ণিঝড় নিসর্গের কারণে কেরলে বর্ষা প্রবেশ করে গেলেও তা খুব বেশি ভারতের মূল ভূখণ্ডের প্রবেশ করতে পারেনি এবং অগ্রসর হতে পারেনি।
তবে ওয়েদার অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল এর তরফ থেকে স্পষ্টই জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে যে, দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ু অর্থাৎ বর্ষা জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে আবারো অগ্রসর হতে শুরু করবে।
দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ু অর্থাৎ বর্ষা পশ্চিমবঙ্গে এই বছর ১১ ই জুন থেকে ১৩ ই জুনের মধ্যে প্রবেশ করতে পারে।
তারপর ধীরে ধীরে তা মধ্য ভারতের উত্তর-পশ্চিম ভারতের দিকে এগিয়ে যাবে।
দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ু অর্থাৎ বর্ষা এই বছর শুরুর দিকে কিছুটা দুর্বল থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। যার কারণে ভারতের অধিকাংশ অঞ্চলে বৃষ্টিপাত তুলনামূলক কম হতে পারে। তারমধ্যে উত্তর-পশ্চিম ভারতের এবং দক্ষিণ মধ্য ভারতের কিছু অঞ্চলে বৃষ্টিপাত তুলনামূলক কম হতে পারে।
তবে উত্তর-পূর্ব ভারতে বৃষ্টিপাতের তীব্রতা যথেষ্ট বেশি থাকবে।
উত্তর পূর্ব ভারতের মধ্যে ত্রিপুরা মনিপুর নাগাল্যান্ড এবং আসামের বেশ কিছু অঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত চলবে জুন মাস থেকেই।
এমন পরিস্থিতির কারণ হিসেবে জানানো হচ্ছে যে ভারত মহাসাগরের ডাইপোল মধ্যম ( IOD Neutral ) প্রকৃতির থাকার কারণে এবং এল নিনো মধ্যম ( Neutral El Nino ) প্রকৃতির থাকার কারণে বর্ষা প্রাথমিকভাবে শুরুর দিকে কিছুটা দুর্বল থাকতে পারে।
তবে বর্ষার মৌসুমে মাঝামাঝি পর থেকে অর্থাৎ অগাষ্ট মাসের পর ভারত মহাসাগরের ডাইপোল নেগেটিভ ( IOD Negative ) এবং দুর্বল লা নিনো ( Weak Lania ) হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তাই বর্ষার তীব্রতা সময়ের সাথে সাথে বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা তীব্র হয়েছে।
এছাড়াও অন্যান্য সমস্ত ধরনের বায়ুমণ্ডলের উপরের স্তরের বায়ুপ্রবাহের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে এই প্রকাশ করা হচ্ছে।
জুলাই মাসের বৃষ্টিপাত:
সমগ্র ভারতের জুলাই মাস থেকে বৃষ্টিপাত উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেতে শুরু করবে। ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে
তারি সাথে মধ্য ভারত এবং পূর্ব ভারতের অধিকাংশ অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের তীব্রতা অনেক গুণ বেশি বৃদ্ধি পাবে। সমস্ত রকম তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে জুলাই মাসে অত্যাধিক বেশি বৃষ্টিপাত পরিলক্ষিত হবে পূর্ব উত্তর প্রদেশ, বিহার ঝাড়খন্ড পূর্ব মধ্য প্রদেশ এছাড়াও আসাম ত্রিপুরা মেঘালয় এবং উত্তরবঙ্গের অধিকাংশ অঞ্চল গুলিতে।
অত্যধিক বেশি বৃষ্টিপাত পরিলক্ষিত হবে কেরল কর্নাটক এবং মহারাষ্ট্রের উপকূলবর্তী অঞ্চলে।
তবে উত্তর পশ্চিম ভারতে বৃষ্টিপাতের তীব্রতা সূরা মূলক অনেকটাই কম থাকবে। সে তুলনায় রাজস্থান, পাঞ্জাব ও হরিয়ানার বেশ কিছু অঞ্চলে বৃষ্টিপাত উল্লেখযোগ্যভাবে কম থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
আগস্ট মাসের বৃষ্টিপাত:
সমগ্র ভারতে আগস্ট মাসের বৃষ্টিপাত অনেকটা স্থানান্তরিত হবে উত্তর-পশ্চিম ভারতের দিকে। সে ক্ষেত্রে পশ্চিম মধ্যপ্রদেশ গুজরাট পশ্চিম উত্তর প্রদেশ এবং মধ্যম মহারাষ্ট্রের অধিকাংশ অঞ্চলে বৃষ্টিপাত এর তীব্রতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে। উত্তর পূর্ব ভারতের অধিকাংশ অঞ্চলে ব্যাপক বৃষ্টিপাত চলবে এবং বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়াও উত্তর ভারতের অধিকাংশ রাজ্যে বৃষ্টিপাত স্বাভাবিক এবং ভালো রকম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সেপ্টেম্বর মাসের বৃষ্টিপাত;
এই মাস থেকে ধীরে ধীরে সমগ্র ভারতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমতে শুরু করে এবং মৌসুমী বায়ুর প্রভাব অনেকটাই স্থিতিশীল হয়ে আসে। তবে এই বছর সেপ্টেম্বর মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিলক্ষিত হবে সমগ্র ভারতে।
তবে অধিকাংশ বৃষ্টিপাত হতে পারে সেপ্টেম্বর মাসে পূর্ব ভারত কেন্দ্রীক। সেক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ বিহার ঝাড়খণ্ড উত্তর উড়িষ্যা পূর্ব মধ্য প্রদেশ পূর্ব উত্তর প্রদেশ সহ উত্তর পূর্ব ভারতের অধিকাংশ অঞ্চলে বৃষ্টিপাত ও অতি বর্ষা লক্ষ্য করা যাবে।
তবে তীব্রতার নিরিখে অনেকটাই কম থাকবে দক্ষিণ ভারতের বেশ কিছু অঞ্চলে।
ভারতের বাকি অংশের স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিলক্ষিত হবে সেপ্টেম্বর মাসেও।
🔴 এই বছর মৌসুমী বায়ু থাকাকালীন খুব বেশি মাত্রায় স্থল নিম্নচাপ লক্ষ্য করা যাবে। যার কারণে বৃষ্টিপাতে তীব্রতা অনেক গুণ বেশি থাকবে।
🔴 মৌসুমী অক্ষরেখা এবং শক্তিশালী ঘূর্ণাবর্ত প্রভাবে এবছর অধিকাংশ সময় মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকতে সাহায্য করবে।
🔴 বর্ষার মাঝামাঝি এবং শেষের দিকে ঘনঘন নিম্নচাপের প্রভাব লক্ষ্য করা যেতে পারে এই বছর।
🔴 তবে এই বছর অন্ধ্রপ্রদেশ এবং উড়িষ্যার কিছু অঞ্চলে বৃষ্টিপাত স্বাভাবিক বা তার কিছুটা কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
🔴 এই বছর বর্ষার অধিকাংশ সময় মিডিয়ান যুলিয়ান অশ্বিলেশন ( MJO ) বারবার ভারত মহাসাগরে শক্তিশালী রূপে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের বর্ষার পূর্বাভাস।
দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ু অর্থ বর্ষা জুন মাসের 11 তারিখ থেকে 13 তারিখের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতাতে প্রবেশ করে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে পশ্চিমবঙ্গে বর্ষা প্রবেশ করার পরেই তার সক্রিয়তা অতিমাত্রায় লক্ষ্য করা যাবে না। তবে স্বাভাবিক থেকে স্বাভাবিকের থেকে কিছুটা কম বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে জুন মাসে দিকগুলোতে।
জুলাই থেকে বৃষ্টিপাতের তীব্রতা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে।
জুলাই মাসে দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ জেলাগুলোতে স্বাভাবিকের থেকে অতিমাত্রায় বেশি বৃষ্টিপাত লক্ষ্য করা যেতে পারে। মুর্শিদাবাদ বীরভূম পশ্চিম বর্ধমান পূর্ব বর্ধমান মালদা এবং দক্ষিণ দিনাজপুরের অধিকাংশ অঞ্চলে স্বাভাবিকের থেকে অতি বৃষ্টির লক্ষ্য করা যাবে।
তবে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির জুলাই মাসে বৃষ্টিপাতের তীব্রতা স্বাভাবিক থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
আগস্ট মাসে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টিপাতের তীব্রতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে তবে উপকূলবর্তী কিছু অঞ্চলে বৃষ্টিপাত কিছুটা কম থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
এবং সেপ্টেম্বরে সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ অঞ্চলে বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের থেকে অনেক গুণ বেশি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে অঞ্চলে বৃষ্টিপাত স্বাভাবিক ভাবেই অনেক বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এই বছর যার কারণে ঐ সমস্ত অঞ্চলে সাময়িকভাবে বন্যা পরিস্থিতির আশংকা করা হচ্ছে।
সবমিলিয়ে এবছর পশ্চিমবঙ্গের স্বাভাবিক এবং স্বাভাবিকের থেকে কিছুটা বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
১০১% এল পি এ ( LPA ) হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সমগ্র পশ্চিমবঙ্গে।
সব মিলিয়ে এই বছরের বর্ষা সমগ্র ভারতের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সমগ্র ভারতে এই বছরের বর্ষা স্বাভাবিক এবং স্বাভাবিকের থেকে কিছুটা বেশি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রেও স্বাভাবিক বর্ষা এবং স্বাভাবিকের থেকে কিছুটা বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে।
🔴 বিশেষ উল্লেখ্য
✔️ এই বছর সমগ্র ভারতে বর্ষা স্বাভাবিক এবং স্বাভাবিকের থেকে একটু বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
✔️ সমগ্র ভারতে এই বছর বর্ষা ১০৪% এলপিএ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
✔️ সমগ্র পশ্চিমবঙ্গে এ বছর বর্ষা ১০১% এলপিএ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
✔️ ঘূর্ণাবর্ত এবং মৌসুমী অক্ষরেখার প্রভাবে খুব বেশি পরিমাণ বৃষ্টিপাত লক্ষ্য করা যাবে সমগ্র ভারতে।
✔️ বারবার স্থল নিম্নচাপের প্রভাবে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকছে।
✔️ এই বছর বর্ষা পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় ১১ ই জুন থেকে ১৩ ই জুন এর মধ্যে প্রবেশ করার সম্ভাবনা।
✔️ বর্ষার প্রথম দিকে সক্রিয়তা কিছুটা কম থাকলেও পরের দিকে বর্ষা অনেক বেশি সক্রিয়তা লক্ষ্য করা যাবে সমগ্র দেশজুড়ে।
✔️ এই বছর সমগ্র বর্ষার অধিকাংশ সময়ে পশ্চিমবঙ্গের মাঝের জেলাগুলিতে বেশি বৃষ্টিপাত লক্ষ্য করা যেতে পারে।
✔️ উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময় স্বাভাবিক বর্ষার সাথে সাথে অতি বর্ষা লক্ষ্য করা যাবে।
বর্ষার এই সমস্ত পূর্বাভাস টির সম্পূর্ণরূপে বর্তমান আবহাওয়া পরিস্থিতির ওপর পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে এবং বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে করা হচ্ছে।
জুন থেকে জুলাই পর্যন্ত বর্ষার পূর্বাভাসটি নির্ভুলতা ৮৫%
অগাস্ট মাসে বর্ষার পূর্বাভাসটি নির্ভুলতা ৬৮%
এবং সেপ্টেম্বর মাসে বর্ষার পূর্বাভাসটি নির্ভুলতা ৫৭%
By
Observational, Analysis
Forecaster P. Ghosh
Data Analysis
Forecaster D. Majumder
Observational
Forecaster S. Ghosh
Forecaster A. Batabyal
Data Analysis
Forecaster R. Bhakat
Issue Date
30th May 2020
Published
11:00 AM IST
05/06/2020
Very nice post thanks for detailed information. To stay update with latest news from all over the world in bengali please visit Keykhabor
ReplyDeleteThank you
Delete