বারংবার ভারী বৃষ্টির জন্য উত্তরবঙ্গ, বাংলাদেশ ও উত্তর পূর্ব ভারতের নদী গুলির জলস্তর অনেক বেশি রয়েছে। শেষবারের বৃষ্টিতে তৈরি হয়েছিল বন্যা পরিস্থিতি। তিস্তা তোর্সা সংকোশ রায়ঢাক জলঢাকা ব্রহ্মপুত্র সহ নানা নদীতে বর্তমানে জলস্তর অনেক বেশি রয়েছে। প্লাবিত হয়েছে উত্তরবঙ্গ বাংলাদেশ ও উত্তর পূর্ব ভারতের বেশ কিছু জায়গা। বারবার বৃষ্টিতে ঘটেছে পাহাড়ধস ও হড়পাবান। পার্বত্য ঢালের অনেক জায়গাই বর্তমানে দুর্বল ও ধ্বসপ্রবণ হয়ে রয়েছে। এরমধ্যেই উত্তরবঙ্গ , বাংলাদেশ ও উত্তর পূর্ব ভারতের বেশ কিছু জায়গায় আবারো তৈরি হয়েছে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। হতে পারে বজ্রবিদ্যুৎ সহ প্রবলবৃষ্টি আজ থেকে ২৩ তারিখের মধ্যে পর্যায়ক্রমে। অর্থাৎ ১৮-২৩ তারিখের মধ্যে। আলিপুরদুয়ার কোচবিহার দার্জিলিং দিনাজপুর জলপাইগুুড়়ি মালদা সহ উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু জায়গায় মাঝারি থেকে ভারী ও কোথাও কোথাও অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে ওই সময়ের মধ্যে। কয়েকটি অঞ্চলে হতে পারে চরমতম ভারী বৃষ্টি। যাকে আবহাওয়া বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় Extremely heavy falls. মালদা মুর্শিদাবাদ জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে বিহার, উত্তর পূর্ব ভারত ও উত্তর বাংলাদেশের রঙপুর সিলেট ময়মনসিংহ বিভাগে প্রবল বৃষ্টি ও বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। পার্বত্য অঞ্চলে ধ্বস ও হড়পাবানের সতর্কতা দেওয়া হল ১৮-২৩ তারিখের মধ্যে। সমগ্র অঞ্চলেই প্রবল বজ্রপাতের সতর্কতা দেওয়া হল। রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগেও ভালো বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের। ওই সময় পশ্চিমবঙ্গ , বাংলাদেশ ও উত্তর পূর্ব ভারতের প্রদত্ত জায়গাগুলোতে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকবে। উত্তরবঙ্গ একে বারবার ভারীবৃষ্টির কবলে পড়ে বন্যা পরিস্থিতির সম্মুখীন। তারপর আবার ৪-৫ দিন ভারীবৃষ্টি পর্যায়ক্রমে হলে আরো ভয়ঙ্কর বন্যা , চরম দূর্ভোগ ও সম্পদ-জীবনহানির সম্মুখীন হতে পারে। ওয়েদার অফ ওয়েস্টবেঙ্গল তাই উত্তরবঙ্গ, বাংলাদেশ, বিহার ও উত্তর পূর্ব ভারতে এই আসন্ন দুর্যোগ নিয়ে সত্যিই খুব চিন্তিত। বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বীরভূম ও মুর্শিদাবাদ জেলায়। বর্ধমান জেলায়
২০ তারিখ থেকে বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ২০-২৪ তারিখের মধ্যে ফের বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি/ বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে দক্ষিণবঙ্গে বিক্ষিপ্ত ভাবে। অর্থাৎ সবজায়গায় সমান বৃষ্টির বন্টন না থাকলেও বিক্ষিপ্ত ভাবে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি হতে পারে। তবে ২৪-৪৮ ঘন্টায় কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে আদ্র ও অসস্তিকর ঘর্মাক্ত গরম অনুভব হবে। আকাশ আংশিক মেঘলা থাকবে।
সর্বোশেষ উপগ্রহচিত্র বিশ্লেষণ করে বলা যায় মৌসুমী অক্ষরেখাটি বর্তমানে উত্তর পশ্চিম ভারত থেকে উত্তরবঙ্গ হয়ে উত্তর পূর্ব ভারত পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। ২৪-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অক্ষরেখা আরো শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। যার জন্য মৌসুমী বায়ু উত্তর পূর্ব ভারত, উত্তরবঙ্গ ও বাংলাদেশের বেশ কিছু জায়গায় যথেষ্ট শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। এছাড়া বিহার ও উত্তরপ্রদেশের বেশ কিছু জায়গায় সক্রিয় হতে পারে। শক্তিশালী মৌসুমী অক্ষরেখা সমুদ্র থেকে জলীয় বাষ্প শোষণ করে শক্তিশালী পরিচলন মেঘপুুঞজ তৈরি করবে। এরপ্রভাবে ওই সমস্ত অঞ্চলে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে ১৮-২৩ তারিখের মধ্যে।
অন্যদিকে বর্তমানে দক্ষিণবঙ্গের নানা জায়গায় উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়া রয়েছে। এবং সাগর থেকে প্রচুর জলীয় বাষ্প ঢুকে কেপ সূচক ক্রমশ বৃদ্ধি করছে। এরফলে ৪৮-৭২ ঘন্টায় বজ্রগর্ভ মেঘসঞ্চারের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হতে থাকবে। পরবর্তী সময়ে পশ্চিমা বাতাস তীব্র হলে বজ্রগর্ভ মেঘ উপর থেকে নীচে নেমে এসে বিক্ষিপ্ত বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি হতে পারে ২০-২৩ তারিখের আশেপাশে। অথবা পশ্চিমাঞ্চলের বজ্রগর্ভ মেঘ সঞ্চার হয়ে পশ্চিমা বাতাস দ্বারা পূর্বে এসেও বিক্ষিপ্ত বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি হতে পারে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে। অথবা স্থানীয় ভাবে বজ্রমেঘ তৈরি হতে পারে দক্ষিণবঙ্গে ২০-২৩ তারিখের মধ্যে। মোটকথা ২০-২৩ তারিখের মধ্যে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষিপ্ত ভাবে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা একটা তৈরি হতে পারে।
পূর্বাভাস প্রদানকারী অর্ঘ্য বটব্যাল
তারিখ: ১৮.৭.২০
সময়: ১২.৪৭ মিনিট ( দুপুর )
No comments:
Post a Comment