ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় পিলিন। এবারেও কী আনন্দ মাটি করবে পুজোয় কোনো ঘূর্ণিঝড়?? - Weather of West Bengal

My weather, my bengal.

Friday, September 04, 2020

ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় পিলিন। এবারেও কী আনন্দ মাটি করবে পুজোয় কোনো ঘূর্ণিঝড়??

সালটা ২০১৩। মহালয়া পড়েছিল ৭ অক্টোবর। অর্থাৎ তার ৭ দিনের মাথায় দুর্গাপূজা। ৭ অক্টোবর ঝকঝকে শরৎকালীন আবহাওয়া রেডিওতে আমবাঙালি শুনছিল " বাজল তোমার আলোর বেনু , মাতল রে ভুবন...."। এক অন্য উত্তেজনা। পুজোর এক উন্মাদনা। সকল বাঙালি আশা করেছিল যাক এবারে পুজো আর ভাসবেনা। সবাই মেতে উঠব এক ঝকঝকে আবহাওয়ায়। বর্ষা তার মধ্যেই বিদায় নেবে। পুজোটাতো এবছর একটু দেরি করে পড়েছে। অন্যদিকে মহালয়ার ২ দিন ঠিক আগেই পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে শুরু হয়েছিল
এক ধংসাত্মক ঘূর্ণিঝড়ের আগমনী গভীর নিম্নচাপের হাত ধরে। গভীর নিম্নচাপ ঠিক মহালয়ার দিন আন্দামান সাগর ও সংলগ্ন এলাকায় নিমজ্জিত হয়ে যায়। যারপর থেকেই বঙ্গোপোসাগরে দামামা বেজে ওঠে ঘূর্ণিঝড়ের। গভীর নিম্নচাপ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়, প্রবল ও অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হয়ে ষষ্ঠী / সপ্তমী নাগাদ
পরিণত হয় অতি বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ে। অষ্টমীর দিন ওড়িশার গোপালপুরে আছড়ে পড়ে ২১৫ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায়। যার সর্বোচ্চ ঝাপটা ২৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায়। লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় পুরী, গোপালপুর, গঞ্জাম, গজপতি , জগৎসিংপুর, খুড়দা , বিশাখাপত্তনম সহ ওড়িশা ও অন্ধ্রের বেশ কিছু জায়গা ১১-১৩ অক্টোবরের মধ্যে। অন্যদিকে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের নানা জায়গায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সঙ্গে চলে দমকা প্রবল হাওয়া। পুজোর আনন্দ মাটি করে দেয় ঘূর্ণিঝড় পিলিন
। অথচ ষষ্ঠী এমনকি সপ্তমীর দিন কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের মানুষ বুঝতে পারেনি কী দুর্যোগ আসছে অষ্টমী থেকে দশমী পর্যন্ত সাধারণ আকাশ ও প্রকৃতি দেখে। যাঁরা আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুসরণ করে বা বিশ্লেষণ করে তারা অবশ্য একটা দুর্যোগের আঁচ পেয়েছিল। তবে পুজোর আনন্দ যে মাঠে মারা যাবে একদম সেটা ২০১৩ সালে অবিশ্বাস্য মনে হয়েছিল আমবাঙালির। 
( অতি বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় পিলিন: 12oct,2013)
অক্টোবর মাস একটি ঘূর্ণিঝড় প্রবণ মাস। ওই সময় ভারত তথা পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ থেকে
বিদায় নেয় মৌসুমী বায়ু। কিন্তু দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর ও আন্দামান সাগর থেকে তখনো বিদায় নেয়না মৌসুমী বায়ু। আন্ত ক্রান্তীয় সম্মিলন অঞ্চল দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হতে থাকে। তাই বঙ্গোপোসাগর, আন্দামান সাগর ও পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিম্নচাপ, ক্রান্তীয় ঝঞ্ঝা ও ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয় মাঝে মাঝে। এই ঘূর্ণাবর্ত পরবর্তী পর্যায়ে আরো শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এই নিম্নচাপগুলির গতি প্রকৃতি মৌসুমী বায়ু থাকাকালীন সময়ের মতো হয়না। 
খুব ধীর গতির হয় ও দ্রুত শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
ওই সময় সমুদ্র জল তাপমাত্রা নীচের দিকে বেশি থাকে। উইণ্ড শেয়ার কম থাকায় নিম্নচাপ গুলি গভীর নিম্নচাপ , ঘূর্ণিঝড় এমনকি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। এই ঘূর্ণিঝড় গুলি ওড়িশা , অন্ধ্রপ্রদেশ , পশ্চিমবঙ্গের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। প্রশান্ত মহাসাগর থেকে আসা ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবেও বঙ্গোপোসাগরে নিম্নচাপ তৈরি হয় এবং শক্তিশালী হয়ে ওঠে। 
এবছর দুর্গাপূজা ২১-২৬ অক্টোবরের মধ্যে পড়েছে তাই এই সময় পাকাপাকি পোস্ট মনসুন ঘূর্ণিঝড়ের সময়। তাই এবছর পুজোতে মৌসুমী বায়ুর প্রভাব না থাকলেও হয়ত দেখতে পারি গভীর নিম্নচাপ বা আরেকটি পিলিন বা সমতুল্য কোনো ঘূর্ণিঝড়।
পূর্বাভাস প্রদানকারী অর্ঘ্য বটব্যাল
ওয়েদার অফ ওয়েস্টবেঙ্গল
৪.৯.২০.

No comments:

Post a Comment

Weather Prediction Model

Comming Soon......