দূর্গাপূজার সময় থাকছে কী ঝড়ঝঞ্ঝার ঝুঁকি ?? - Weather of West Bengal

My weather, my bengal.

Thursday, September 03, 2020

দূর্গাপূজার সময় থাকছে কী ঝড়ঝঞ্ঝার ঝুঁকি ??

আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে ওঠে আলোক মঞ্জির। ধরণীর বহিরাকাশে অন্তরীত মেঘমালা
বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের মহিষাসুরমর্দিনীর এই লাইন দুটিতে শরতের অপরুপ সুন্দর আবহাওয়ার সঙ্গে পরিচিতি ঘটে। পরিষ্কার ঝকঝকে আকাশ
পেঁজা তুলোর মত ইতস্তত মেঘ। দু এক পশলা বড়োজোর স্থানীয় বৃষ্টি, রাতে হালকা হালকা শীতভাব। এই শরতের চেনা ছবি। কিন্তু প্রকৃতির
করালগ্রাসে কোনো কোনো বছর হারিয়ে যায় সেই চেনা ছন্দ। সাগরে তৈরি হয় পোস্ট মনসুন ঝঞ্ঝা ভেসে যায় চারদিক ঝড়বৃষ্টিতে। ঘনিয়ে আসে অন্ধকার। ২০১৩ সালেই পুজোর আনন্দ মাটি করেছিল ঘূর্ণিঝড় পিলিন। ২০১২ সালে গভীর নিম্নচাপ। ২০১৮ সালে পশ্চিমবঙ্গে পুজোর ঠিক আগেই বৃষ্টি এনেছিল তিতলি। এবারেও কী পুজো মাটি করে দেবে অসুররুপী ক্রান্তীয় ঝঞ্ঝা?? বড়ো প্রশ্ন চিহ্ন এখন বঙ্গবাসীর
। এবারের পুজো এমন সময় পড়েছে যা ৫০% ও ৫০% সম্ভাবনা রয়েছে পরিষ্কার আবহাওয়া ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার। অর্থাৎ হয় ছক্কা নয় তো ফক্কা। অর্থাৎ হয় খুবই পরিষ্কার ও বৃষ্টিহীন আবহাওয়া বিরাজ করবে। নয়তো ক্রান্তীয় ঝঞ্ঝার ঝড়জলে ভাসবে। তা গভীর নিম্নচাপ হোক বা ঘূর্ণিঝড়। অর্থাৎ এবছর পুজোর সময় বর্ষা বিদায় নিয়ে নেবে সেদিক থেকে নিশ্চিত। কিন্তু তারসঙ্গে হয়তো ওই সময় দামামা বাজতে শুরু করতে পারে সাগরে ক্রান্তীয় ঝঞ্ঝা বা ঘূর্ণিঝড়ের। 
এবার আমরা একটু চোখ বুলিয়ে নিই বিগত বছরের ঝঞ্ঝা ও ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে। অক্টোবর অর্থাৎ পোস্ট মনসুন ঘূর্ণিঝড়়ের দিকে। ২০১২ সালে  অক্টোবরের শেষে তৈরি হয় ঘূর্ণিঝড় নিলম বঙ্গোপোসাগরে। ২৩ অক্টোবর একটি অতি গভীর নিম্নচাপ তৈরি হয়। ২০১৪ সালে অক্টোবরের ৭-১৪ তারিখের মধ্যে হয় বিধ্বংসী ঝড় হুুদহুুদ। ২০১৩ সালে হয় ফাইলিন। এছাড়াও অক্টোবরে অনেক ঘূর্ণিঝড় ও গভীর নিম্নচাপ তৈরি হয়। পরিসংখ্যান অনুযায়ী পুুজোর মাস অক্টোবরে বিগত বছরগুলোতে যথেষ্ট সিস্টেম হয়েছে দেখা যাচ্ছে। 
সাধারণত সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ু উত্তর পশ্চিম ভারত থেকে বিদায় নেওয়া শুরু করে। অক্টোবরের ৮-১৬ তারিখের আশেপাশে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিদায় নেয় মৌসুমী বায়ু। উত্তর পশ্চিম দিক থেকে শুষ্ক বাতাস প্রবেশ করে। অন্যদিকে উত্তর পূর্ব দিক থেকেও বায়ু নেমে আসে। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে শুষ্ক আবহাওয়া তৈরি হয়। আকাশ ঝকঝকে থাকে। কিন্তু ওই সময় সাগরের দক্ষিণাঞ্চলে মৌসুমী বায়ু থাকে। সম্মিলন অঞ্চল নীচের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। যার জন্য দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর ও আন্দামান সাগরে পরিচলন ও মেঘমালার সংগঠন, ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়। এই ঘূর্ণাবর্ত ধীর গতির হয় কারণ মৌসুমী বায়ুর ঠেল থাকে না। দীর্ঘদিন সাগরে শক্তিশালী হতে থাকে অনুকূল জলতাপমাত্রা, নিম্ন উইণ্ড শেয়ার
, লীনতাপকে কাজে লাগিয়ে শক্তিশালী হয়ে ওঠে ও কোনো কোনো ঝঞ্ঝা ঘূর্ণিঝড় হয়েযায়।
অন্যদিকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে টাইফুন উচ্চচাপ বলয়ের প্রভাবে উপর দিকে নাগিয়ে গাল্ফ অফ থাইল্যান্ড বা ভিয়েতনাম দিয়ে দুর্বল হয়ে প্রবেশ করে বঙ্গোপোসাগরে এবং শক্তিশালী হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়।‌ 
ঘূর্ণিঝড় ফাইলিন ও বুলবুল প্রশান্ত মহাসাগরীয়
ঘূর্ণিঝড়ের দুর্বল অংশের প্রভাবে সৃষ্টি হয়। 
এছাড়া বর্তমানে আই ও ডি নিরপেক্ষ থেকে ঋনাত্মকের দিকে আছে। এবং প্রশান্ত মহাসাগরে লা নিনা পরিস্থিতি থাকায় পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগর ও বঙ্গোপোসাগর উত্তপ্ত হয়ে আছে। আগামী দিনে আরো হবে। যার জন্য ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির পোটেনশিয়াল শক্তি যথেষ্ট বেশি। তাই অক্টোবর মাসে বা পুজোর সময় ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা একটা থেকেই যাচ্ছে। 
পূর্বাভাস প্রদানকারী অর্ঘ্য বটব্যাল
ওয়েদার অফ ওয়েস্টবেঙ্গল
৩.৯.২০
রাত: ৯.৪৫ মিনিট।

1 comment:

Weather Prediction Model

Comming Soon......