৪ মে ২০২৩.
নিজস্ব সংবাদদাতা: বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে চলেছে ক্যাটেগরি ৩ বা তার থেকেও শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মোচা। আগামী ৪ থেকে ৫ দিনের মধ্যে দক্ষিণ মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় তৈরি হতে চলেছে সক্রিয় নিম্নচাপ। যা পরবর্তীতে আরো শক্তিশালী হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। মনে করা হচ্ছে নিম্নচাপ সৃষ্টির পরপরই অনুকূল পরিবেশ পাওয়ার জন্য খুব দ্রুত হারে শক্তিশালী হয়ে উঠবে নিম্নচাপ এবং ক্রমশঃ উত্তর দিকে অগ্রসর হবে বেশিরভাগ সময়। সিস্টেমটি ১০ থেকে ১৩ মে ২০২৩ এর মধ্যে আরো শক্তিশালী হয়ে ভেরি সিভিয়ার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে এবং পরবর্তীতে ক্যাটেগরি ৩ মাত্রার ঘূর্ণিঝড় বা তার থেকেও বেশি শক্তিশালী হবার সম্ভাবনা রয়েছে। সিস্টেমটি কোথায় যাবে তা নির্ভর করে আছে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের আসন্ন সিস্টেমের সক্রিয়তা, মায়ানমার উচ্চচাপ বলয় ও পশ্চিমী ঝঞ্ঝার উপর। এখন দেখার বিষয় পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় সিস্টেম যদি পশ্চিম দিকে অভিমুখ নেয় ও যথেষ্ট ঘনীভূত হয়ে যায় সেক্ষেত্রে মায়ানমার উচ্চচাপ বলয় দুর্বল হয়ে সরে পড়বে এবং প্রশান্ত মহাসাগর থেকে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া সিস্টেমের সঙ্গে আসঞ্জন এর কারণে বেশি উওর উত্তর পূর্ব বা উত্তর পূর্ব দিকে হেলে গেলে তখন অভিমুখ হবে বাংলাদেশের বরিশাল বিভাগ থেকে চট্টগ্রাম বিভাগের আশেপাশে। সেক্ষেত্রে সিস্টেমটির উত্তর মায়ানমারের দিকে যাওয়ার ঝুঁকিও থাকবে। তবে এই সম্ভাবনা তুলনামূলক ভাবে কম কারণ পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় সিস্টেম খুব বেশি শক্তিশালী না হবার সম্ভাবনা রয়েছে তবে কিছুটা প্রভাব রাখতেও পারে যদি তাই হয় হয়তো প্রাথমিক ভাবে কিছুটা উত্তর উত্তর পূর্ব দিকে টেনে নিয়ে গেলেও পরবর্তীতে সোজা বাংলাদেশ উপকূলে আঘাতের সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ প্রাথমিক ভাবে উত্তর ও উত্তর উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসরের পর পরবর্তীতে মায়ানমার উচ্চচাপ যদি শক্তি বাড়িয়ে নেয় এবং পশ্চিমী ঝঞ্ঝা চলে আসে তখন বাংলাদেশের বরিশাল বিভাগে আঘাতের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকবে । এক্ষেত্রে চট্টগ্রামের কক্সবাজার থেকে বরিশালের বরগুনা ভোলা ঝালকাঠি এই অঞ্চলের মধ্যে আঘাতের ঝুঁকি বেশি থাকবে। আর যদি প্যাসিফিক সিস্টেম অভিমুখ পরিবর্তন করে বা খুব দুর্বল হয় বা নির্ধারিত সময়ের আগেই দুর্বল হয়ে পড়ে এবং মায়ানমার উচ্চচাপ বলয় প্যাসিফিক অঞ্চলের দিকে সক্রিয় হয়ে ওঠে সেক্ষেত্রে সিস্টেম সোজা উত্তর ও সামান্য উত্তর উত্তর পশ্চিম আবার কখনো উত্তর হয়ে বা সোজা উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে বাংলাদেশের খুলনা থেকে বরিশাল উপকূলের মধ্যে ল্যাণ্ডফল করতে পারে। যদি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা অক্ষের পূর্ব দিকে পড়ে তাহলে বাংলাদেশ আর যদি সরাসরি পশ্চিমী ঝঞ্ঝার অক্ষরেখার সঙ্গে সংযোগ তৈরি হয় সেক্ষেত্রে সোজা উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলাদেশের সুন্দরবনের মধ্যে আঘাত হানার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে। এমন হলে দু বাংলাই ঝড়বৃষ্টিতে উড়বে। আর মায়ানমার উচ্চচাপ যদি শক্তি বাড়িয়ে কিছুটা পশ্চিমে সরে আসে সেক্ষেত্রে সিস্টেম আর মায়ানমার তো হবেই না। বাংলাদেশের পূর্বাংশে আঘাতের সম্ভাবনা কমবে সিস্টেমটি সোজা পশ্চিমবঙ্গ বা পশ্চিমবঙ্গ -বাংলাদেশ উপকূলকে টার্গেট করে এগিয়ে আসবে। এবং পশ্চিমবঙ্গ বা দক্ষিণ পশ্চিম বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এই সম্ভাবনা বেশি রয়েছে। দ্বিতীয় তৃতীয় ও চতুর্থ সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি রয়েছে। অর্থাৎ হাই রিস্কে থাকছে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূল। মাঝারি সম্ভাবনায় থাকছে ওড়িশা ও মায়ানমার উপকূল। তবে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে উত্তর মায়ানমার উপকূল দক্ষিণ মায়ানমারের থেকে একটু বেশিই ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে মনে করা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলাদেশ হতে পারে সিস্টেমটির টার্গেট জোন। ১২ থেকে ১৫ মে ২০২৩ এর মধ্যে ল্যাণ্ডফলের সম্ভাবনা বেশি রয়েছে। তবে সিস্টেম হবে ভয়াবহ ও বিধ্বংসী। অনুকূল সমুদ্র জলতল তাপমাত্রা, উইণ্ড শেয়ার, এম জে ও সাপোর্ট, কেলভিন ও রসভি কানেকশন সিস্টেমটিকে অত্যধিক মাত্রায় শক্তিশালী করে তুলবে পুরো দেখার মতো শক্তি নেবে সিস্টেম। ক্যাটেগরি ৩ বা তার চেয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠবে ঘূর্ণিঝড় যার সর্বোচ্চ বাতাসের গতি হবে ১৭৮ থেকে ২০৯+ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায়। অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে বঙ্গোপসাগরে আগামী ১০ দিনের মধ্যে। সতর্কতা পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূলে।
No comments:
Post a Comment