নিজস্ব সংবাদদাতা: ২৬শে সেপ্টেম্বর থেকে নিম্নচাপের প্রভাব সম্পূর্ণ ভাবে কেটে গিয়ে ফিরে আসবে শরতের আকাশ। মনে পড়বে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে ওঠে আলোক মঞ্জির ধরণীর বহিরাকাশে অন্তরীত মেঘমালা..। আর পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে সক্রিয় হয়ে উঠবে ক্রমশঃ ৯০ ডব্লু নামের নিম্নচাপটি। নিম্নচাপটি বর্তমানে ফিলিপাইনের কাছে অবস্থান করছে। ধীরে ধীরে আরো শক্তিশালী হয়ে আগামী ৭২ থেকে ৯৬ ঘন্টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ ধারণ করে ক্রমশঃ পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে। সিস্টেমটি ইন্দোচায়না অঞ্চল অতিক্রম করে বঙ্গোপসাগরে ২৮ থেকে ৩০শে সেপ্টেম্বর ২০২৩ এর মধ্যে আসতে চলেছে। নিম্নচাপটি সুদুর ফিলিপাইন থেকে ইণ্দোচায়না অঞ্চল অতিক্রম করে আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় ঘূর্ণাবর্ত বা নিম্নচাপ হিসাবে পতিত হবে এবং ক্রমশঃ শক্তিশালী হতে শুরু হবার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে সিস্টেমটি আন্দামান সাগরে পতিত হবার পর পশ্চিম উত্তর পশ্চিম বা উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবার সম্ভাবনা রয়েছে। অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে তৈরি হতে চলা নিম্নচাপ প্রসঙ্গে ওয়েদার অফ ওয়েস্টবেঙ্গলের অন্যতম আবহাওয়া বিশ্লেষক অর্ঘ্য বটব্যাল জানাচ্ছেন সেপ্টেম্বর মাসের শেষ থেকে অক্টোবরের প্রথম দিকে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগর থেকে সিস্টেম বা ঘূর্ণিঝড়/ নিম্নচাপ প্রবেশের ঘটনা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এই সময় পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগর থেকে সিস্টেম বঙ্গোপসাগরে প্রবেশ করে কোনো কোনো সময় প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দুর্বল হয়ে পড়ে আবার কিছু কিছু সিস্টেম অনুকূল পরিবেশ পেলে পুনরায় শক্তিশালী হয়ে ওঠে উদাহরণ হিসেবে বলা যায় ঘূর্ণিঝড় ফাইলিন। ২৫শে সেপ্টেম্বর ২০২৩ থেকে ধীরে ধীরে উত্তর পশ্চিম ভারত থেকে মৌসুমী বায়ু বিদায় নিতে শুরু করবে। এবং পরবর্তী ৭ দিনের ভিতর ভারতের বেশ কিছু অঞ্চল থেকে মৌসুমী বায়ু বিদায় নেবে। মৌসুমী বায়ু বিদায় নিতে শুরু করলে বঙ্গোপসাগরের উইণ্ড শেয়ারের পরিবর্তন হয়ে থাকে। বঙ্গোপসাগরে উইণ্ড শেয়ার কমতে শুরু করে যা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে থাকে। অন্যদিকে ইণ্টার ট্রপিক্যাল কনভারজেন্স জোন দক্ষিণ দিকে সরে যাওয়ার জন্য প্রশান্ত মহাসাগর থেকে যে পালস বা নিম্নচাপ আসে তা আন্দামান সাগরে পতিত হয়। বঙ্গোপসাগরের অনেক নীচে থেকে নিম্নচাপ তৈরি হবার জন্য ও কম উইণ্ড শেয়ার থাকায় নিম্নচাপ স্লো মুভিং হয়ে শক্তিশালী হয়ে ওঠে। মৌসুমী বায়ু বিদায় নিতে শুরু করলেও সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে সমগ্র ভারতের বেশ কিছু অঞ্চলে ও বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী বায়ু থাকবে যারজন্য বিদায় বেলায় মৌসুমী বায়ু সিস্টেমকে যথেষ্ট পরিমাণে শক্তিশালী ও সুগঠিত করে দিয়ে যাবে। এর পাশাপাশি আই টি সি জেটের সান্নিধ্য থাকার জন্য সিস্টেম প্রথম থেকেই সুগঠিত হয়ে উঠতে পারে। এম জে ও অক্টোবরের প্রথম দু সপ্তাহের বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে এবং এর পাশাপাশি সমগ্র বঙ্গোপসাগরে সমুদ্র জলতল তাপমাত্রা যথেষ্ট বেশি থাকার জন্য সমগ্র অনুকূল পরিবেশ পাবে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে চলা নিম্নচাপ। আসন্ন নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে এবং এই নিম্নচাপ থেকে সবচেয়ে ঝুঁকি থাকছে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলের একথা জানাচ্ছেন ওয়েদার অফ ওয়েস্টবেঙ্গলের অন্যতম আবহাওয়া বিশ্লেষক অর্ঘ্য বটব্যাল।
পূর্বাভাসের সংক্ষিপ্তসার:
🌀 পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে। যার আপাতত নাম 90W.
🌀 নিম্নচাপটি ৭২ থেকে ৯৬ ঘন্টায় আরো ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
🌀 নিম্নচাপটি ইণ্টার ট্রপিক্যাল কনভারজেন্স জোন বরাবর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ২৮ থেকে ৩০শে সেপ্টেম্বর ২০২৩ এর মধ্যে আন্দামান সাগরে পতিত হতে পারে।
🌀 পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগর থেকে আসা নিম্নচাপের প্রভাবে ২৯শে সেপ্টেম্বর থেকে ১লা অক্টোবর ২০২৩ এর মধ্যে আন্দামান সাগরে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হবে।
🌀 বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের শক্তিশালী হয়ে ওঠার প্যারামিটারস অ্যাকটিভ থাকার জন্য নিম্নচাপটি শক্তিশালী হয়ে গভীর নিম্নচাপে এমনকি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
🌀 নিম্নচাপ থেকে সবচেয়ে ঝুঁকি থাকছে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলের।
২৩শে সেপ্টেম্বর ২০২৩ (বিকাল ৫টা)

No comments:
Post a Comment