উৎপত্তিস্থল চিনের ইউহান প্রদেশ। সেই এলাকা
থেকে প্রসারিত হয়ে পৃথিবীর প্রায় ১১৮ টি দেশে বিস্তৃত হয়েছে করোনা ভাইরাস। যার পোশাকি নাম নোভেল করোনা। করোনা শব্দের অর্থ হল মুকুট ( Crown )। এটি ল্যাটিন ভাষা থেকে এসেছে। করোনা ভাইরাসের লক্ষণ প্রকাশ পেতে ১৪ দিন পর্যন্ত লাগতে পারে। এই সময়ের মধ্যেই ধীরে ধীরে শ্বাসযন্ত্রের উপর বাসা বেঁধে ক্ষতি করতে পারে করোনা ভাইরাস।
সবথেকে শক্তিশালী করোনার বৈজ্ঞানিক কোড হল COVID 19 . বর্তমানে চীন থেকে প্রসারিত হয়ে ভারত , বাংলাদেশ, পাকিস্তান , শ্রীলঙ্কা , কুয়েত , কাতার , ইটালি , ফ্রান্স , আমেরিকা , থাইল্যান্ড সহ নানা জায়গায় বিস্তৃত হয়েছে করোনা ভাইরাস। এর সংক্রামণের উৎস তেমন না জানা থাকলেও বাদুড় জাতীয় বা অন্য কোনো প্রাণী উৎস হতে পারে। এছাড়া সংক্রামিত মানুষ ( Positive ) থেকে অন্যান্য মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা রয়েছে।
বাংলাদেশে আক্রান্ত ৩ জন এখনো পর্যন্ত। নেপাল ও ভুটানের আক্রান্তের সংখ্যা ২ জন। মালদ্বীপে আক্রান্ত ৮ জন। শ্রীলঙ্কাতে ২ জন। পাকিস্তানে ১৯ জন। সর্বাধিক আক্রান্ত চীনে ৮০৯৮০ জন এখনো পর্যন্ত। এছাড়া ইতালি , জার্মানি সহ ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে করোণা ভাইরাসের প্রকোপ যথেষ্ট বেশি।
রোগলক্ষণ : সর্দি ও কাশি , গলাব্যথা ও জ্বর অর্থাৎ সাধারণ ফ্লু এর মতো। পরবর্তী পর্যায়ে চরমশ্বাস কষ্ট , মারাত্মক কাশি ও অঙ্গবিকল হয়া। ফুসফুসের কার্য সম্পাদন বন্ধ হওয়া ( ফাইব্রোসিস ) ও দুর্বলতা। এই ভাবে রোগী ক্রমশ মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায়। তবে উচ্চ অনাক্রমতা ও চিকিৎসার মধ্যে দিয়ে সেরে ওঠা সম্ভব কিছুটা। তবে এর নির্দিষ্ট কোনো প্রতিষেধক না থাকায় করোণার সংক্রমণ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে চিন্তার বিষয় হয়ে উঠেছে ক্রমশ। ভারতে বর্তমানে এই রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ৬০ থেকে ৬৭ পরে ৭৩ এ গিয়ে পৌঁছেছে। বাংলাদেশেও ঢুকে পড়েছে করোণা ভাইরাস। আক্রান্তের সংখ্যা ৩ জন।
ভারত ও সংলগ্ন দেশগুুুলো খুব দ্রুত আক্রান্ত হচ্ছে করোনা ভাইরাসের প্রকোপে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত ও থাইদেশের
আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। বাকি অঞ্চলে বাড়ছে এই রোগের সংক্রমণ। চলেছে কড়াকড়ি
করোনা নিয়ে গুজব :
১) মুরগি বা খাসির মাংসে করোণা ভাইরাস পাওয়া গেছে। এটি কেবলমাত্র গুজব ও অসাধুতা। এই রোগের উৎস সম্পর্কে তেমন স্পষ্ট ধারণা না থাকলেও বাদুড় ও সংক্রামিত
মানুষ থেকে ছড়ায়। খাসি বা মুরগি থেকে ছড়ায় এমন বিষয় ভিত্তিহীন।
২) করোনা ভাইরাস থেকে হয়া ফ্লু দুরারোগ্য। এই ধারণাও ভিত্তিহীন। কারণ উচ্চ অনাক্রমতা
উপযুক্ত চিকিৎসা ও রোগ নির্ধারণের মধ্য দিয়ে
আক্রান্ত মানুষ সুস্থ হয়ে উঠছে। তবে প্রতিষেধক আবিষ্কার তেমন না হওয়ায় ও সংক্রামণ হার বেশি থাকায় সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
৩) করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ও এরকম উপসর্গে চিহ্নিত দুটি রোগের কারণ আলাদা হতে পারে। তাই সাধারণ সর্দিকাশি মানেই করোনা। এই ধারণা পোষণ করা ঠিক নয় ।
বর্তমানে পৃথিবীর মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১২৪৫১৯ জন। যার মৃত্যু সংখা ৪৬০৭ জন। এবং প্রসারিত দেশ ১১৮ টি । এর মৃত্যু সংখা দেখেই বোঝা যাচ্ছে Covid এ আক্রান্ত মানেই মৃত্যু নয় । বেঁচে ওঠা সম্ভব এ থেকে।
কি ভাবে বুঝবেন আপনি করোনা আক্রান্ত:
১) সর্দি বা সর্দিবিহীন জ্বর ও কাশি হলে উপযুক্ত চিকিৎসা করান।
২) Covid 19 টার্গেট করে মানুষের ফুসফুসকে। তাই প্রতিদিন সকালে খালি পেটে একটি শ্বাস নিয়ে ১০-১২ সেকেন্ড চেপে ধরুন। এর মাঝে যদি কাশি বা অন্য কোনো শ্বাস জনিত সমস্যা বোধ করেন তখন ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
৩) প্রতিদিন পরিমিত জল পান করুন। এবং এর মাধ্যমে ভাইরাসগুলো গুলি ফুসফুসে না গিয়ে থেকে খাদ্যনালীর মধ্যে দিয়ে পাকস্থলী পর্যন্ত যাবে। ফলে নিরাপদ থাকবেন তবুও কিছুটা।
করোনা বিশ্বের মহামারী :
সম্প্রতি WHO করোনাকে চিহ্নিত করেছে বিশ্বের মহামারী হিসেবে। এই রোগের প্রসার ও মৃত্যু হার নানা দেশে পৌঁছে যাওয়ায় এরুপ নামকরণ করা হয়েছে।
প্রতিকার :
🛑 উপযুক্ত মাস্ক পরিধান করা।
🛑 বাইরে থেকে আসার পর হাত ও পা ভালোভাবে ধোয়া।
🛑 পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর সম্পূর্ণ সেদ্ধ করা খাদ্য গ্রহণ করা। বাদুড় জাতীয় প্রাণীর মাংস থেকে বিরত থাকা।
🛑 করোনা আক্রান্ত স্থান থেকে কোনো পর্যটক এলে অবশ্যই চেক করা উচিত। এবং ওই সমস্ত স্থানে খুব প্রয়োজন ছাড়া না যাওয়াই উচিত।
🛑 জ্বর ও কাশি হলে উপযুক্ত চিকিৎসা করান।
🌐 লেখা ও গ্রাফিক্স : অর্ঘ্য বটব্যাল
⭐ তারিখ : ১২.৩.২০
⭐ সময় : বিকাল ৫ টা।
No comments:
Post a Comment