ঘূর্ণিঝড়ের গতিবিধি ? কোথায় কবে ঘূর্ণিঝড় ?
বর্তমানে বহু মিডিয়া থেকে এবং সংবাদমাধ্যমের খবরে প্রকাশিত হচ্ছে বারবার ঘূর্ণিঝড় বা গভীর নিম্নচাপ এর নাম।
বারবার উল্লেখ করা হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় আমফান, ধেয়ে আসছে।
কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে যেটা খবর সেটি হল, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তত্সংলগ্ন নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কাছে একটি গভীর নিম্নচাপ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। সেই নিম্নচাপটি ক্রমশ শক্তি বৃদ্ধি করে দ্রুত ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয় উত্তর দিকে অগ্রসর হয় পশ্চিমবঙ্গের উপকূলের কাছাকাছি বাংলাদেশের কাছে আসার কথা ছিল।
সেইরূপ সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছিল।
পূর্বাভাস মত ইতিমধ্যেই দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন অঞ্চলের উপর নিম্নচাপ গত ৪৮ ঘণ্টায় তৈরি হয়ে গেছে এবং তা কিছুটা শক্তি বৃদ্ধি ও করে।
কিন্তু নিম্নচাপের গতিবিধি খুব ধীর গতিসম্পন্ন হওয়ায় এবং দ্রুত শক্তি বৃদ্ধি করতে না পারায় এখনো পর্যন্ত সেটি নিম্নচাপের আকারে অবস্থান করছে।
সর্বশেষ আবহাওয়া পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে, নিম্নচাপটি খুব ধীর গতিসম্পন্ন হওয়ায় আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা ততো শক্তি বৃদ্ধি করে গভীর নিম্নচাপ হতে সক্ষম হবে না।
নিম্নচাপটি আগামী ৭২ ঘন্টাতেও ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার কোনরূপ সম্ভাবনা নেই। শুধু তাই নয় নিম্নচাপ পশ্চিমবঙ্গ থেকে ১৭৭১ কিলোমিটার বা তারও বেশি দূরে থাকায় তার কোন রকম প্রভাব পশ্চিমবঙ্গে পড়বে না আগামী ৫ দিনেও।
ওয়েদার অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল সর্বদা বঙ্গোপসাগর এর আবহাওয়া পরিস্থিতির ওপর নজর রেখে চলেছে। তাই সমস্ত রকম তথ্য বিশ্লেষণ করে জানানো হচ্ছে যে, আগামী ৪ দিনে কোনরকম দুর্যোগের সম্ভাবনা নেই ঘূর্ণিঝড় এর ফলে সমগ্র পশ্চিমবঙ্গে।
বর্তমান বায়ুমণ্ডলের সমস্ত রকম পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে অন্যান্য সমস্ত রকম পরিস্থিতি অনুকূল থাকলেও, মেডিয়ান যুলিয়ান অশ্চিলেশন ( MJO ) আগামী ৪৮ ঘন্টা পর থেকে কোন ভাবেও অনুকূল থাকবে না ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়ার জন্য।
তবে সাধারণ নিম্নচাপের কারণে আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ বৃষ্টিপাত চলবে এবং আবহাওয়া কিছুটা খারাপ থাকতে পারে।
আগামী ছয় দিনেও পশ্চিমবঙ্গের ঘূর্ণিঝড়ের কোনরকম আশঙ্কা নেই। ওয়েদার অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল এর তরফ থেকে তা স্পষ্টতই জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
তবে আবহাওয়া পরিস্থিতি দেখে অনুমান করা হচ্ছে যে, আগামী ৭২ ঘন্টা পর থেকে নিম্নচাপ কিছুটা শক্তি বৃদ্ধি করতে পারে, তবে তার প্রভাব উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে কোন রকম প্রভাব পড়বে না।
বর্তমান আবহাওয়া পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে এটাও দেখা যাচ্ছে যে, নিম্নচাপ ৭২ ঘন্টা পর থেকে প্রাথমিকভাবে পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিমের দিকে সরলে তা প্রাথমিকভাবে অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূল পর্যন্ত করতে পারে। সে ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে যে আগামী ৬ মে তারিখের পর থেকে ধীরে ধীরে শক্তি বৃদ্ধি করতে শুরু করতে পারে এই নিম্নচাপটি।
তখন সে ক্ষেত্রে এই নিম্নচাপের কারণে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। অর্থাৎ সে ক্ষেত্রে বলা যায় মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ বা তৃতীয় সপ্তাহ হয়ে যেতে পারে।
তাই আপাতত সহজে বলা সম্ভব যে, আগামী পাঁচ দিন পর্যন্ত কোন রকম ঘূর্ণিঝড় বা নিম্নচাপের ভয় থাকছে না পশ্চিমবঙ্গের জন্য।
পশ্চিমবঙ্গে ইতিমধ্যেই যে বৃষ্টিপাত চলছে, তা ঘূর্ণাবর্তের কারণে স্থানীয়ভাবে বজ্রগর্ভ মেঘের সঞ্চারের কারণে বৃষ্টিপাত চলছে। তার সাথে নিম্নচাপের কোন সম্পর্ক নেই।
ওয়েদার অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল এর তরফ থেকে তাই স্পষ্টতই জানিয়ে দেয়া হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গবাসীর কাছে অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কোনো রকম কারণ নেই এখনই।
ওয়েদার অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল এর তরফ থেকে পশ্চিমবঙ্গের মৎস্যজীবীদের জন্য কোনরকম সর্তকতা দেয়া হচ্ছে না। আগামী পাঁচ দিন পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের মৎস্যজীবীদের জন্য কোনরকম সতর্কতাঃ থাকছে না ৭ ই মে পর্যন্ত।
তবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সমস্ত মৎস্যজীবীদের জন্য সাবধানে চলাচল করার পরামর্শ দিচ্ছে।
By P.Ghosh
Senior Meteorologist WOWB
UPDATE: 10:00 PM IST
02/05/2020
No comments:
Post a Comment