২০২০ সাল সত্যিই ভারত তথা গোটা বিশ্বের জন্য আতঙ্ক স্বরূপ। কখনো করোনা আতঙ্ক , ঘূর্ণিঝড় ও নানা প্রাকৃতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক বিপর্যয় যেন পিছু ছাড়ছে না ভারত সহ গোটা বিশ্বের। করোনা আতঙ্কের মাঝেই মে মাসের ২০ তারিখ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। যার আছড়ানোর সময় বাতাসের গতি ছিল ঘণ্টায় ১৫৫-১৭৫ কিলোমিটার। এবং সর্বোচ্চ বাতাসের ঝাপটা ছিল ১৮০-২০০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায়। তছনছ করে দিয়ে গেছে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ, বাংলাদেশ ও ওড়িশার উপকূলীয় অঞ্চল। এর রেষ কাটতে না কাটতেই আবার উত্তর ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ক্রান্তীয় গভীর নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে। সাধারণত সাগরের নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্য বেশ কিছু অনুঘটক কাজ করে। যার উল্লেখযোগ্য হল সমুদ্র জল তাপমাত্রা। বর্তমানে বঙ্গোপসাগর ও আরবসাগর উভয় এলাকাতেই সমুদ্র জল তাপমাত্রা যথেষ্ট বেশি।
। এই সমুদ্র জলতাপমাত্রা সামুদ্রিক নিম্নচাপ এবং ঝঞ্ঝার শক্তি বৃদ্ধির উপযোগী। এই অনুকূল তাপমাত্রায় সাগরে পরিচলন পক্রিয়া বেশি হয়ে থাকে এছাড়া পরিমন্ডলের লীনতাপ
শোষন করে সিস্টেম শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
সাধারণত সমুদ্র জলতাপমাত্রা ছাড়া নিম্ন থেকে মধ্যম উইণ্ড শেয়ার ঘূর্ণিঝড়ের গঠন , শক্তি বৃদ্ধির ও শক্তি ধরে রাখতে প্রয়োজন। বর্তমানে আরবসাগরের বেশিরভাগ অঞ্চলে উইণ্ড শেয়ার নিরপেক্ষ থেকে কমের দিকে রয়েছে। এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে উইণ্ড শেয়ার কমের দিকে রয়েছে। তাই জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে আবার উত্তর ভারত মহাসাগরে গভীর নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া মে মাসের শেষ থেকে জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে এম জে ও ( Madden jullian Ossilation) আরবসাগরের জন্য অনুুকুল হতে চলেছে এছাড়া সংলগ্ন এলাকার জন্য অনুুূকুল হতে চলেছে। এর ফলে ঘূর্ণাবর্ত ও কনভেনশন পক্রিয়া সক্রিয় হতে পারে ওই সময়ের মধ্যে।
তার ফলেই আরবসাগরে ক্রান্তীয় ঝঞ্ঝার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে। এছাড়া Gfs , Ecmwf, Icon , Cmc সহ নানা মডেল বিশ্লেষণ করে বলা যায় এখনো পর্যন্ত আরবসাগরে ৩০ মে থেকে জুন মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে যা পরবর্তীতে শক্তিবৃদ্ধি করে গভীর নিম্নচাপ , ঘূর্ণিঝড় হতে পারে। অনুুূকূল পরিবেশ বজায় থাকায় ও বেশ কিছু মডেল বিশ্লেষণ করে বলা যায় এটি ঘূর্ণিঝড় হবার পরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে আরো যার সম্ভাবনা এখনো পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে। বেশ কিছু মডেল আরবসাগরে দুুটি সিস্টেমের ইঙ্গিতও দিয়়েছে জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে। এরপ্রভাবে জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে মৌসুমী বায়ুর আরবসাগরীয় শাখা সক্রিয় হবার সম্ভাবনা রয়েছে। মৌসুমী বায়ু ২৮ মে থেকে ৩ জুুনের আশেপাশে ভারতের মুুল ভূূখণড ও সংলগ্ন এলাকায় প্রবেশ করতে পারে। তবে বঙ্গোপোসাগরে এখন উল্লেখযোগ্য সিস্টেম তৈরির সম্ভাবনা আগামী ১০ দিনের ভিতর নেই তাই অযথা আতঙ্কিত হবার কিছু নেই। তবে আরবসাগরের সিস্টেম থেকে গুজরাট, মহারাষ্ট্র , কর্ণাটক প্রভৃতি অঞ্চল বা পাকিস্তান উপকূূল প্রভাবিত হবার সম্ভাবনা রয়েছে। ওমানের দিকেও যেতে পারে ঘূর্ণিঝড়। তবে এর প্রত্যক্ষ প্রভাব কলকাতা সহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলাদেশে পড়়ার সম্ভাবনা নেই তাই চিন্তার কোনো কারণ নেই।
পূর্বাভাস প্রদানকারী:অর্ঘ্য বটব্যাল।
( অ্যাডমিন, Weather of Westbengal)
তারিখ: ২৬.৫.২০.
সময়: বিকাল ৪.৩০ মিনিট।
No comments:
Post a Comment