দেবীপক্ষের সাথেই ভেসে আসবে ঘূর্ণিঝড়ের পদধ্বনি। - Weather of West Bengal

My weather, my bengal.

Tuesday, August 10, 2021

দেবীপক্ষের সাথেই ভেসে আসবে ঘূর্ণিঝড়ের পদধ্বনি।

আর মাত্র দু'মাস বাকি শারদীয়া দুর্গোৎসবের। আনন্দে মেতে উঠবে আমবাঙালি। হুজুগে আমবাঙালি সেপ্টেম্বর মাস থেকেই ব্যাস্ত হয়ে পড়ে শারদীয়ার আবাহনে। কিন্তু দেবীপক্ষের সূচনার সময়েই যেন নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলায় , কাশের বনে ইয়া দেবী সর্বভুতেষ্ষু শক্তি রূপেণ সংস্থিতার পাশাপাশি বঙ্গোপসাগরে বেজে ওঠে ঘূর্ণিঝড় ও গভীর নিম্নচাপের ডঙ্কানিনাদ। সেপ্টেম্বর মাসের শেষ থেকেই উত্তর পশ্চিম ভারত থেকে বিদায় নিতে শুরু করে দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ু। পাকিস্তান ও সংলগ্ন উত্তর পশ্চিম ভারতের উপর উচ্চচাপ বলয় ক্রমশ সক্রিয় হতে থাকে। তার জন্য উচ্চচাপের আবর্তে পড়ে উত্তর পশ্চিমা শুষ্ক বাতাস সক্রিয় হতে থাকে। পাশাপাশি ওয়েস্টার্লি জেট স্ট্রিম নীচের দিকে নামতে শুরু করে। পরবর্তী পর্যায়ে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে মধ্যভারত, বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে বিদায় নেয় মৌসুমী বায়ু। অক্টোবরের ৭-১৪ তারিখের মধ্যেই গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিদায় নিয়ে নেয় মৌসুমী বায়ু। উপর দিক থেকে সাগরে নামতে থাকে উত্তর পশ্চিমা বাতাস এবং নীচের দিকে উষ্ণ আদ্র বাতাসের সংঘর্ষের ফলেই তৈরি হতে থাকে সাগরের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে ঘূর্ণাবর্ত। যা ক্রমশ উষ্ণ সমুদ্র জলতলে শক্তি সঞ্চার করে থাকে। এবং শক্তিশালী হয়ে গভীর নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ের রূপ ধারণ করে। আগের পোস্টে একজন কমেন্ট করেছিল " পাতি নিম্নচাপ ছাড়া কিছুই হবেনা"?? একটা জিনিষ সম্পর্কে ধারণা দিই আগে। বর্ষাকালের নিম্নচাপ ও মৌসুমী বিদায়কালীন নিম্নচাপ দুটোর চরিত্র যথেষ্ট আলাদা হয়ে থাকে। বর্ষাকালীন নিম্নচাপ উপকূলের কাছাকাছি বা স্থলভাগে বেশি তৈরি হয়। তার জন্য এগুলো দীর্ঘ সমুদ্র অতিক্রম করে না। মৌসুমী অক্ষরেখা অনুসরণ করে মধ্ ভারতের দিকে এগিয়ে যায়। কিন্তু পুজোর সময় যে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয় সেগুলো আন্দামান সাগর, দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগর, বা পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়। যার জন্য দীর্ঘ সময় জলপথ অতিক্রমের সুযোগ পায়। এছাড়া মৌসুমী বায়ু বিদায় নেওয়ায় সিস্টেম শ্লথ গতিতে এগোয় যার জন্য শক্তিশালী হতে পারে এই সিস্টেম। ফলে পাতি নিম্নচাপের থেকে পুজোর সময় গভীর নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা বেশি থাকে। এরপরের বিষয় হলো আগে থেকে কি ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে ধারণা দেওয়া সম্ভব?? চলুন এবিষয়ে আমি কিছু বলবনা বলবে ১৯৬০ থেকে ২০২০ সালের পরিসংখ্যান। 
১৯৬০ সাল থেকে ২০২০ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে দীর্ঘ ৬১ বছরে সেপ্টেম্বরের ২০ তারিখ থেকে অক্টোবরের ১০ তারিখের মধ্যে মোট ৪১ টি শক্তিশালী নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছে। এবং ৬১ বছরের মধ্যে ৩২ বছর সিস্টেম হয়েছে অর্থাৎ সেপ্টেম্ববরের ২০ তারিখ থেকে অক্টোবরের ১০ তারিখের মধ্যে সিস্টেমের সম্ভাবনা ৫২%। এরপর ১৯৬০ থেকে ২০২০ পর্যন্ত অক্টোবরের ১০ তারিখ থেকে ৩০ তারিখের মধ্যে ৬০ টি গভীর নিম্নচাপ, ঘূর্ণিঝড় ও শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছে। এই পর্যায়ে গোটা পোস্ট মনসুন সিজেনের সবচেয়ে বেশি ঘূর্ণিঝড় হয়েছে। আবার ১৯৯৯, ২০১০, ২০১২, ১৯৬২, ১৯৬৩, ১৯৯৬, ১৯৯৮ সহ বেশ কিছু বছরে ওই সময় একাধিক ঝড় হয়েছে ওই সময়ের মধ্যে। ৬১ বছরের মধ্যে ৪৩ বছর সিস্টেমের কবলে পড়েছে অক্টোবরের ১০ তারিখ থেকে ৩০ তারিখ। তাই বলা যায় এই সময়ে ৭০% সিস্টেম হবার সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থাৎ দুর্গাপূজা অক্টোবরের ১১-১৫ তারিখের মধ্যে পড়েছে ২০২১ সালে তাই রেঞ্জ মিলিয়ে বলা যায় ৭০% গভীর নিম্নচাপ বা ঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে দূর্গাপূজা ও তৎসংলগ্ন উৎসবগুলোতে। অক্টোবরের ৩০ তারিখ থেকে নভেম্বরের ১০ তারিখের মধ্যে সিস্টেম কিছুটা কম হলেও যে সিস্টেম হয়েছে তা যথেষ্ট পরিমাণে শক্তিশালী সিস্টেম। নভেম্বরের ১০ তারিখ থেকে ৩০ তারিখের মধ্যে সিস্টেমের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে সিস্টেম হবার সম্ভাবনা ৪৫ থেকে বেড়ে ৫৭ % হয়েছে ওই সময়ে। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে দুর্গাপূজা, লক্ষীপুজা ও কালীপূজা যে সময়ে পড়েছে দুর্যোগের ঘনঘটা হলেও হতে পারে গভীর নিম্নচাপ বা ঝড়ের ভ্রুকুটিতে পড়তে পারে বাঙালির প্রাণের উৎসবের সময়।
 প্রদত্ত চিত্রে দেখা যাচ্ছে ১৯৬০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে মোট গভীর নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড় মিলিয়ে সিস্টেম হয়েছে ১৬৯ টি। যার মধ্যে সেপ্টেম্বরের ২০ থেকে অক্টোবরের ১০ তারিখের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয়়েছে গভীর নিম্নচাপ ১৬ টি, অতি গভীর নিম্নচাপ ১২ টি, সাইক্লোন ৮ টি এবং আরও শক্তিশালী সিস্টেম ৬ টি। ১৯৬০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ১০ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে ১১ টি গভীর নিম্নচাপ, ১২ টি অতি গভীর নিম্নচাপ, ১৮ টি ঘূর্ণিঝড় ও ১৭ টি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হয়েছে। তাহলে বোঝাই যাচ্ছে দূূরগা পুুজোর সময় ও পুুজো সংলগ্ন উৎসবে ২০২১ সালে ঘূর্ণিঝড় বা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়়ের সম্ভাবনা বেশি। তবে গভীর নিম্নচাপ ও অতি গভীর নিম্নচাপের সম্ভাবনাও রয়েছে। অর্থাৎ পরিসংখ্যান ঠিক হলে ২০২১ সালে মহালয় পুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুজোর সময় ও তার সংলগ্ন উৎসবে ভালো দুুর্যোগের সম্ভাবনা রয়েছে। তাহলে বোঝাই যাচ্ছে বিগত পোস্টে ভুল কিছু বলা হয়নি বা প্যানিক সৃষ্টি করার জন্য কিছু বলা হয়নি। 
বর্তমান বছরে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে লা নিনা পরিস্থিতি উদ্ভবের সম্ভাবনা রয়েছে অর্থাৎ পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ও বঙ্গোপসাগরের সমুদ্র জলতল তাপমাত্রা পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে বেশি থাকবে তার অর্থ পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ও বঙ্গোপসাগরে সিস্টেমের যথেষ্ট অনুকূল পরিবেশ তৈরি হবে অক্টোবর ও নভেম্বরে। ঘনঘন সিস্টেম ও শক্তিশালী সিস্টেমের সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে ইণ্ডিয়ান ওশেন ডাইপোল ঋনাত্মকের দিকে থাকার জন্য বঙ্গোপসাগরে ডবল ইঞ্জিন অ্যাকশন শুরু হবে। অর্থাৎ সমস্ত SST বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় পুঞ্জীভূত হবে। সেই সঙ্গে বাড়বে Convective activity যার জন্য দুর্গাপূজা ও সংলগ্ন উৎসবগুলোতে গভীর নিম্নচাপ ও ঝড়ের আশঙ্কা বাড়ছে। 
Statistical analysis, Cyclone, Depression, September to November, Generalization, Post monsoon cyclone season 2021, May dampen Durgapuja & associated festival, Cyclonogenesis potential energy, High, October November, La Nina and Negative Iod. Weather of Westbengal team.
10.8.2021. 

No comments:

Post a Comment

Weather Prediction Model

Comming Soon......