নিজস্ব সংবাদদাতা: নভেম্বরের চতুর্থ সপ্তাহে কমবেশি জাঁকিয়ে শীত অনুভূত হচ্ছে সমগ্র দক্ষিণবঙ্গে। তবে আগামী ৪৮ ঘন্টায় শীতের দাপট কিছুটা কমতে পারে। সমগ্র দক্ষিণবঙ্গের কোথায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কতটা হ্রাস পেয়েছে ২৩ থেকে ২৬ নভেম্বর ২০২২ এর মধ্যে তার একটা পরিসংখ্যান তুলে ধরার চেষ্টা করি। ---
কল্যাণী(নদীয়া): ১২°সে
বাগাতি (হুগলি): ১১°সে
আমতা (হাওড়া): ১৪°সে
হাবরা (২৪ পরগণা): ১৩°সে
ক্যানিং (২৪ পরগণা): ১৪°সে
পুরুলিয়া (পুরুলিয়া): ১২°সে
খড়্গপু্র (মেদিনীপুর): ১৪°সে
দীঘা (মেদিনীপুর): ১৪°সে
জিয়াগঞ্জ (মুর্শিদাবাদ):১২°সে
বর্ধমান (বর্ধমান): ১৩°সে
পানাগড় (বর্ধমান): ১০°সে
বোলপুর (বীরভূম): ১২°সে
প্রদত্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় ৭০% এর বেশি অঞ্চলের তাপমাত্রা ১৫°সে ও তার নীচে ৩ দিন ধরে রয়েছে। একমাত্র কলকাতা ছাড়া কলকাতার সর্বোনিম্ন তাপমাত্রা ১৬-১৯°সে এর মধ্যেই ঘোরাফেরা করছে বা হাওড়ার আন্দুলের পার্টিকুলার কোনো জায়গায় ১৬ থেকে ১৮°সে আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে মানেই শীত পড়েনি সেটা নয় বরং যে সমস্ত অঞ্চলে শীত পড়ছেনা তাঁরা আমাদের দোষারোপ না করে নিজেরা পরিবেশের প্রতি আরো সচেতন হয়ে উঠুন। কেন? কারণটা পরে বলছি তার আগে হাওড়া জেলার একটি বিশেষ স্টেশনের তাপমাত্রার চিত্র তুলে ধরি।
হাওড়ার (আমতা):
২৪/১১/২০২২ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫.৪°সে।
২৫/১১/২০২২ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫.২°সে।
২৬/১১/২০২২ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪.৮°সে।
২৭/১১/২০২২ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫.২°সে।
হাওড়া জেলার একটি স্টেশনে পরপর চারদিন তাপমাত্রা ১৫°সে ছিল। এর পাশাপাশি উলুবেড়িয়ার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পরপর দুই তিনদিন ছিল ১৫°সে। এবার আন্দুলে তাপমাত্রা ১৬-১৮°সে রয়েছে মানেই হাওড়া জেলায় শীত পড়েনি সেটা নয়। হাওড়া জেলায় নভেম্বর মাসের গড় স্বাভাবিক তাপমাত্রা থাকে ১৭-১৮°সে এর আশেপাশে। সে তুলনায় ১৪-১৫°সে তাপমাত্রা নেমে যাওয়া মানে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটাই তাপমাত্রা কমে যাওয়া। অন্যদিকে কলকাতার সর্বোনিম্ন তাপমাত্রা ১৬-১৮°সে রয়েছে যা এক কথায় স্বাভাবিক তাপমাত্রা তবে কলকাতাকে ঘিরে থাকা ব্যারাকপুর, কল্যাণী, হাবরা, নিউটাউন এমনকি ২৪ পরগণার ক্যানিং এর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা অনেক নীচে নেমে গেছে। জাঁকিয়ে শীত অনুভূত হচ্ছে কিন্তু কলকাতায় নয় কেন?? কলকাতার নিউটাউনে কিন্তু ভালোই ঠাণ্ডা অনুভব হচ্ছে। কিন্তু প্রপার কলকাতায় নয় কেন? এব্যাপারটা নিয়ে এখুনি আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। গাছপালা লাগাতে হবে। যানবাহনের ধোঁয়া ধূলার যথাপযুক্ত পরীক্ষা নিরীক্ষা করানোর ব্যবস্থা করতে হবে। কলকাতার আকাশে প্রচুর পরিমাণে ধূলিকণা ও গ্রীণ হাউজ গ্যাস মিশে চলার জন্য ইনসোলেশন প্রশেস এ ব্যাঘাত হচ্ছে। যে পরিমাণ সূর্যের তাপ প্রবেশ করছে সে পরিমাণ সূর্যের তাপ বিকিরিত বা বিকিরণ হয়ে মহাশূন্যে ফিরে যেতে পারছেনা। যার জন্য কলকাতার কনজাস্টেড অঞ্চলগুলো হিট আইল্যাণ্ডে পরিণত হচ্ছে যারজন্য তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকলেও রাতের দিকে হুড়মুড়িয়ে তাপমাত্রার পতন হচ্ছে না। অন্যদিকে বড়ো বড়ো ফ্ল্যাট বাড়ি থাকার জন্য উত্তরে বাতাসের গতিও বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। এই পরিস্থিতি হাওড়ার আন্দুল সহ বেশ কিছু জায়গার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হচ্ছে। তবে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের শীতের দাপট সমগ্র দক্ষিণবঙ্গে বাড়বে। যারজন্য কলকাতার তাপমাত্রা ১৬°সে এর নীচে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে চলে যেতে পারে। এবং পরে আরো শীতের দাপট বাড়বে। তাই সামগ্রিক ভাবে বলা যায় সমগ্র দক্ষিণবঙ্গে জাঁকিয়ে শীত পড়লেও কলকাতার কিছু আঞ্চলিক উপাদান কলকাতার সর্বোনিম্ন তাপমাত্রা নামতে দিচ্ছে না। আরেকটি কথা নভেম্বরে রাতের দিকে জম্পেশ ঠাণ্ডা অনুভব হলেও দিনের তাপমাত্রা ২৭-৩০°সে এর আশেপাশে থাকছে। শীতের দাপটটা বাড়ছে মূলত রাতের দিকে অনেকটা ফেব্রুয়ারি ফরম্যাটে এখন খেলছে শীত। দিনভর জম্পেশ ঠাণ্ডা পাওয়া যাবে ডিসেম্বর মাসে। তাই আঞ্চলিক বাঁধার কারণে মূলত কলকাতা, আন্দুল এই সমস্ত যায়গায় দিনের বেলায় সর্বচ্চ তাপমাত্রা ২৮-৩০°সে থাকছে কিন্তু যখন সূর্যাস্তের পর হুড়মুড়িয়ে তাপমাত্রা নামার কথা তখন বাঁধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বাতাসে থাকা গ্রীণ হাউজ গ্যাস ধূলিকণা বড়ো বড়ো বাড়ি জনসমাগম । এর পাশাপাশি বড়ো বড়ো অফিস ফ্ল্যাট থাকার জন্য উত্তরে হাওয়া সেভাবে ঢুকছেনা যেভাবে কল্যাণী হাবরায় ঢুকছে। তাই শীত নিয়ে আমাদের উপর আঙ্গুল তোলার আগে নিজেদের দৈনিক কর্মকাণ্ড ও ভুল নগরায়ন পদ্ধতির উপর আঙ্গুল তুলুন এবার থেকে।
২৮/১১/২০২২
No comments:
Post a Comment