। শক্তিশালী এম জে ও সারা ভারত জুড়ে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়বৃষ্টি ঘটিয়ে থাকে। বড়ো বড়ো পশ্চিমী ঝঞ্ঝা তৈরি করে এবং সেগুলো পূর্ব ভারতের দিকে ড্রিফট করে থাকে বা নেমে আসে। বড়ো পশ্চিমী ঝঞ্ঝা নেমে এলে পশ্চিমা জেট বাতাসকে স্বাভাবিকের চেয়ে উপরে নিয়ে চলে যায় যার জন্য লোয়ার ট্রপোস্ফিয়ারিক লেভেলে তৈরি হয় উইণ্ড ডিসকন্টিনিউটি, ঘূর্ণাবর্ত প্রভৃতি সিস্টেম। দীর্ঘদিন যাবৎ এম জে ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে ও পশ্চিম গোলার্ধে অবস্থান করছে যার জন্য উল্লেখযোগ্য শক্তিশালী পশ্চিমী ঝঞ্ঝার অভাব ঘটেছে উত্তর পশ্চিম ভারতে। উত্তর পশ্চিম ভারতে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা এলেও তা বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্প পূর্ণ আদ্র বাতাস টেনে ঝাড়খণ্ড বা পূর্ব মধ্য ভারতের উপর নিয়ে যেতে পারেনি অন্যদিকে সেই সমস্ত পশ্চিমী ঝঞ্ঝা আরবসাগর থেকে জলীয় বাষ্প টেনে উত্তর পশ্চিম ভারতে বিক্ষিপ্ত ভাবে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়বৃষ্টি ঘটিয়েছে যার জন্য উত্তর পশ্চিম ভারতে তাপমাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে অন্যদিকে মধ্য ভারতের উপর উচ্চচাপ বলয় সক্রিয় হবার জন্য উত্তর পশ্চিমা শুষ্ক বাতাস প্রবেশ করেছে দক্ষিণবঙ্গে। পশ্চিমা জেট বাতাসকে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা যে টেনে উপরে নিয়ে যাবে তা না হয়ে পশ্চিমা জেট বাতাস স্বাভাবিকের চেয়ে নীচে নেমে এসেছিল অন্যদিকে উচ্চচাপ বলয় দুর্বল হয়ে মধ্য বঙ্গোপসাগরের দিকে চলে যাওয়ায় পশ্চিমবঙ্গে তীব্র দাবদাহের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এরসঙ্গে পরিবেশ দূষণ বা গাছ কেটে ফেলার প্রত্যক্ষ সেরকম সম্পর্ক নেই। তবে হ্যাঁ পরিবেশ দূষণ তাপপ্রবাহের তীব্রতাকে আরো বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করেছে। আসন্ন আগামী ১০ দিনের মধ্যে এম জে ও এর প্রভাব উত্তর পশ্চিম ভারতে সক্রিয় হবে যারজন্য উত্তর পশ্চিম ভারত ও মধ্য ভারতে নিম্নচাপ অঞ্চল সক্রিয় হবে এবং আউটগোয়িং লং ওয়েভ রেডিয়েশন কমে আসবে। ও এল আর বা আউটগোয়িং লং ওয়েভ রেডিয়েশন বাতাসে কতটা পরিমাণে জলীয় বাষ্পের উপস্থিতি তা পরিমাপ করতে সাহায্য করে। উত্তর পশ্চিম ভারতে ও এল আর কমে আসা উত্তর পশ্চিম ভারতে কনভেনশন পদ্ধতি শক্তিশালী হবার ইঙ্গিত দিয়ে থাকে কনভেকটিভ পদ্ধতি সক্রিয় হওয়া এম জে ও এর প্রভাবের ইঙ্গিত দিয়ে থাকে। উত্তর পশ্চিম ভারতে আগামী দিনে এম জে ও সক্রিয় হবার জন্য শক্তিশালী পশ্চিমী ঝঞ্ঝা আসবে এবং উত্তর পশ্চিম ভারতে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা ঘূর্ণাবর্ত ও অক্ষরেখার সৃষ্টি করে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়বৃষ্টি ঘটাবে। এই পশ্চিমী ঝঞ্ঝা গুলি পূর্ব দিকে সরে আসায় ঝাড়খণ্ড বিহার পশ্চিমবঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে উত্তর পশ্চিম ভারত ও মধ্যভারতের পাশাপাশি। এম জে ও ছাড়া পূর্ব ভারতে তাপপ্রবাহের আরো একটি বড়ো কারণ হলো এলনিনো সৃষ্টি হতে চলা এবং পজেটিভ ইণ্ডিয়ান ওশেন ডাইপোল। পজেটিভ ইণ্ডিয়ান ওশেন ডাইপোলে পশ্চিম ভারত মহাসাগরে জলতল তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়ে থাকে। বর্তমানে পশ্চিম ভারত মহাসাগরে নিরক্ষীয় জলতল তাপমাত্রা+০.৩°সে পূর্ব ভারত মহাসাগরের চেয়ে। যারজন্য ভারতের পশ্চিম উপকূলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তামিলনাড়ু কেরালা কর্ণাটক গোয়া মহারাষ্ট্র ও উত্তর পশ্চিম ভারতে ঝড়বৃষ্টির প্রবণতা বেশি থাকায় ওই সমস্ত অঞ্চল তাপপ্রবাহের কবলে পড়লেও তার পরিসর কম এবং ঝড়বৃষ্টি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী হবার সম্ভাবনা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পূর্ব ভারতে শুষ্কতা বেশি থাকবে এবং সান সাইন জোরালো হবে। অন্যদিকে পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে সমুদ্র জলতল তাপমাত্রা+০.২°সে। অর্থাৎ এলনিনো পরিস্থিতি হবার দিকে যাচ্ছে। পজেটিভ আই ও ডি ও এলনিনো ওয়াচ হলে শুষ্কতা ও গরম বাড়ে পূর্ব মধ্য ভারতে ও পশ্চিমবঙ্গে। তার উপর দীর্ঘদিন শক্তিশালী পশ্চিমী ঝঞ্ঝা না আসার কারণে এপ্রিলের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সপ্তাহের দাবদাহ অস্বাভাবিক আকার ধারণ করেছে পশ্চিমবঙ্গে।
২১ শে এপ্রিল ২০২৩
No comments:
Post a Comment