নিজস্ব সংবাদদাতা: মে মাস বরাবরই আতঙ্কে রাখে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশকে। মে মাসে তৈরি হয় বড়ো বড়ো ঘূর্ণিঝড় যা আঘাত হানার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে। আর দুদিন পর শুরু হতে চলেছে মে মাস আর তার আগেই তৈরি ধীরে ধীরে ঘনীভূত হচ্ছে আশঙ্কার কালো মেঘ বঙ্গ ও বাংলার আকাশে। মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণাঞ্চলে তৈরি হচ্ছে নিম্নচাপের সম্ভাবনা। নিম্নচাপের সম্ভাবনা বর্তমান পরিস্থিতি থেকে দেখা যাচ্ছে নিম্নচাপটি তৈরি হতে পারে দক্ষিণ মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকা থেকে। অর্থাৎ যে যায়গা থেকে তৈরি হয়েছে ফণী বা আম্ফান অ্যাপ্রক্স সেই জায়গা বা তার আশপাশের অঞ্চল থেকে তৈরি হতে পারে নিম্নচাপ। এবং পরবর্তীতে শক্তিশালী হবার সম্ভাবনা রয়েছে। মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঘনীভূত হতে পারে নিম্নচাপ যা মে মাসের দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসাবে পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলাদেশ উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। এরকমই সম্ভাবনা পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষত ১০ থেকে ২০ মে এর মধ্যে বঙ্গোপসাগরে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি রয়েছে। বঙ্গোপসাগরে মে মাসের দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে এম জে ও সক্রিয় হবে সেই সঙ্গে বঙ্গোপসাগরের নিম্নাঞ্চলে উইণ্ড শেয়ার ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্য অনুকূল রয়েছে এবং আগামী দিনে বঙ্গোপসাগরের অনেক অংশেই ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির অনুকূল উইণ্ড শেয়ার তৈরি হবে। সেই সঙ্গে বঙ্গোপসাগরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে সমুদ্র জলতল তাপমাত্রা ২৬°সে এর বেশি রয়েছে। কোথাও কোথাও সমুদ্র জলতল তাপমাত্রা ৩১°সে ও তার বেশি রয়েছে তাই বঙ্গোপসাগরে সামগ্রিক ভাবে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। এবার প্রশ্ন হলো বঙ্গোপসাগরে মে মাসের দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড়ের অভিমুখ কোন দিকে থাকে? বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড়ের এসময় অভিমুখ থাকে পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলাদেশ উপকূলের দিকে সবচেয়ে বেশি। আরবিয়ান ও মায়ানমার উচ্চচাপ বলয় ও জেট বাতাসের প্রভাবে প্রাথমিক ভাবে উত্তর পশ্চিম বা উত্তর উত্তর পশ্চিম দিকে অভিমুখ করলেও বাঁক নিয়ে পরবর্তী পর্যায়ে উত্তর, উত্তর উত্তর পূর্ব বা উত্তর পূর্ব দিকে রিকার্ভ করার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে। তাই সিস্টেমের পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলাদেশের দিকে আশার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এবার প্রশ্ন হলো ক্যাটেগরির ঘূর্ণিঝড় মানে কি? সাধারণত ইউ এস ক্যাটেগরি বা সফির সিম্পসন স্কেল অনুযায়ী পাঁচটি প্রধান ক্যাটেগরিতে ঘূর্ণিঝড়কে ভাগ করা যায় বাতাসের গতি অনুযায়ী যথা:
ক্যাটেগরি ১ ঘূর্ণিঝড়: এই ধরনের ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতি থাকে ঘন্টায় ১১৯ থেকে ১৫৩ কিলোমিটার।
ক্যাটেগরি ২ ঘূর্ণিঝড়: এই ধরনের ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতি থাকে ঘন্টায় ১৫৪ থেকে ১৭৮ কিলোমিটার।
ক্যাটেগরি ৩ ঘূর্ণিঝড়: এই ধরনের ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতি থাকে ঘন্টায় ১৭৮ থেকে ২১০ কিলোমিটার।
ক্যাটেগরি ৪ ঘূর্ণিঝড়: এই ধরনের ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতি থাকে ঘন্টায় ২১০ থেকে ২৫০ কিলোমিটার।
ক্যাটেগরি ৫ ঘূর্ণিঝড়: এই ধরনের ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতি থাকে ঘন্টায় ২৫০ কিলোমিটারের বেশি।
ভারতীয় মৌসম বিভাগের স্কেল অনুযায়ী ভেরি সিভিয়ার ঘূর্ণিঝড়, এক্সট্রেমলি সিভিয়ার ঘূর্ণিঝড় ও সুপার ঘূর্ণিঝড় সফির সিম্পসন স্কেল অনুযায়ী ক্যাটেগরি ঘূর্ণিঝড়ের আওতায় পড়ে। এবারে এরকমই ক্যাটেগরি ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে মে মাসের দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে।
২৯ এপ্রিল ২০২৩
No comments:
Post a Comment