৬ই আগষ্ট ২০২৩ (সন্ধ্যা)
নিজস্ব সংবাদদাতা: মৌসুমী অক্ষরেখার উত্তর দক্ষিণ স্থানান্তর কথাটি হয়তো অনেকেই প্রথম শুনে থাকবেন তাই বিষয়টি একটু ভেঙে বলা যাক Random North South shift of monsoon trough এই ইংরেজি শব্দের অর্থ হলো ক্রমাগত উত্তর থেকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ থেকে উত্তরে মৌসুমী অক্ষরেখার সরণ। এতদিন আমরা দেখে এসেছি মৌসুমী অক্ষরেখা উত্তরে উঠে গেলে বেশ কিছুদিন উত্তরবঙ্গেই উঠে বসে থাকত অন্যদিকে ঘর্মাক্ত ও প্রচণ্ড কষ্টকর ভ্যাপসা গরমে নাজেহাল হতো দক্ষিণবঙ্গ আবার মৌসুমী অক্ষরেখা দক্ষিণবঙ্গে নেমে এলে তা দক্ষিণবঙ্গেই বসে থাকত। কিন্তু বর্তমান মৌসুমী অক্ষরেখার পূর্ব প্রান্তের চরিত্র পাল্টেছে। মৌসুমী অক্ষরেখা স্থিরভাবে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে বিরাজ করছে না কখনো উত্তরবঙ্গে উঠে যাচ্ছে আবার কখনো দক্ষিণবঙ্গে নেমে আসছে। যারজন্য সমগ্র পশ্চিমবঙ্গজুড়েই সক্রিয় হচ্ছে বর্ষা। ওয়েদার অফ ওয়েস্টবেঙ্গলের অন্যতম আবহাওয়া বিশ্লেষক অর্ঘ্য বটব্যালের মতে মৌসুমী অক্ষরেখা আগামী ৩ থেকে ৫ দিনের ভিতর পশ্চিমবঙ্গের কোনো একটি অঞ্চলে স্থায়ী হবেনা। কখনো উত্তরবঙ্গ আবার কখনো দক্ষিণবঙ্গে ঘোরাফেরা করবে অর্থাৎ মৌসুমী অক্ষরেখার রাণ্ডম সিফ্ট লক্ষ্য করা যাবে। ওয়েদার অফ ওয়েস্টবেঙ্গলের অন্যতম আবহাওয়া বিশ্লেষক অর্ঘ্য বটব্যাল জানাচ্ছেন বর্তমানে বিহার ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি ঘূর্ণাবর্ত অবস্থান করছে যা আগামী ২৪ ঘন্টায় উত্তরবঙ্গের দিকে সরে আসবে এর পাশাপাশি বাংলাদেশ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। যদি ঘূর্ণাবর্ত নাও তৈরি হয় সেক্ষেত্রে মৌসুমী অক্ষরেখার পূর্ব প্রান্ত এত শক্তিশালী হয়ে উঠবে তা ঘূর্ণাবর্তের মতো আচরণ করবে এবং মৌসুমী অক্ষরেখা সমগ্র পশ্চিমবঙ্গজুড়েই ভালো বৃষ্টি দিতে পারে। প্রচুর পরিমাণে ময়েশ্চার ইনকারশনের সম্ভাবনা রয়েছে দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গে। প্রচুর বায়ুর চাপের তারতম্যের কারণে মৌসুমী অক্ষরেখা ফুটহিলস বা গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ সুনির্দিষ্ট কোনো অঞ্চলে স্থায়ীভাবে অবস্থান করবেনা বলে মনে করছেন ওয়েদার অফ ওয়েস্টবেঙ্গলের অন্যতম আবহাওয়া বিশ্লেষক অর্ঘ্য বটব্যাল। সেক্ষেত্রে উত্তরবঙ্গে মৌসুমী অক্ষরেখার প্রভাবে ভারীবৃষ্টির পর অক্ষরেখাটি দক্ষিণবঙ্গে নেমে এসে ভারীবৃষ্টি ঘটাতে পারে। সমগ্র পশ্চিমবঙ্গজুড়েই অতি সক্রিয় হয়ে উঠবে বর্ষা আগামী ৪৮-৭২ ঘন্টায়। এক্ষেত্রে উত্তরবঙ্গে শক্তিশালী বজ্রগর্ভ মেঘ সঞ্চার হবে আবার বঙ্গোপসাগরে গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা তৈরি হবে। যারজন্য সমগ্র পশ্চিমবঙ্গজুড়েই ননস্টপ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পাশাপাশি মাঝেমধ্যে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। হতে পারে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি। বায়ুর চাপের তারতম্যের কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকবে। আগামী ৪৮-৭২ ঘন্টায় উল্লেখযোগ্য বৃষ্টি বাড়ার কারণ হচ্ছে ওয়েস্টার্লি বা পশ্চিমা বাতাস। এতদিন নিম্নচাপের প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গের উপর পূবালী বাতাস সক্রিয় হতো যারজন্য সেরকম বৃষ্টি হতো না দক্ষিণবঙ্গে। কিন্তু বর্তমানে পশ্চিমা বাতাস সক্রিয় হবার জন্য ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে সমগ্র পশ্চিমবঙ্গজুড়েই এবং একনাগাড়ে বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘন্টায়।
No comments:
Post a Comment