নিজস্ব সংবাদদাতা পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাসে পোস্ট মনসুন ঘূর্ণিঝড় ঋতু আতঙ্কের অনেক নাম। পোস্ট মনসুন ঘূর্ণিঝড় ঋতুতে পশ্চিমবঙ্গ পেয়েছে ছোট বড় বিভিন্ন ধরনের ট্রপিক্যাল সিস্টেম যার দ্বারা ভারী বৃষ্টি ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হয় প্রতিবছরই কম বেশি পোস্ট মনসুন সিস্টেমের দ্বারা পশ্চিমবঙ্গ সিস্টেমের প্রত্যক্ষই হোক বা পরোক্ষ প্রভাব কমবেশি পড়ে পশ্চিমবঙ্গের ওপর ২০২৩ সালে দুর্গাপুজোর নবমীতে ভারী বৃষ্টির কবলে পড়েছিল দক্ষিণবঙ্গের উপকূলীয় এলাকা ঘূর্ণিঝড় হামুন চট্টগ্রামের দিকে যাওয়ার সময় বেশ কিছু অঞ্চলে লেজের ঝাপটায় বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টি দেখা গেছে এছাড়া ২০২০ সালে করোনার বছরে পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে দুর্গাপূজার সময় আঘাত হেনেছিল গভীর নিম্নচাপ যার প্রভাবে ভারী বৃষ্টি পেয়েছিল দক্ষিণবঙ্গের উপকূলীয় এলাকা ২০১৭ সালে দুর্গা পুজোর সময় না হলেও দুর্গা পুজোর পরে ৯ অক্টোবরের আশেপাশে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত দেখা যায়। যা মাত্র ২৪ ঘন্টা সময় নিয়েছিল ঘূর্ণাবর্ত থেকে তিনগুণ শক্তি বাড়াতে। ঘূর্ণাবর্তটি পরবর্তী পর্যায়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন অঞ্চলের ওপর অবস্থান করছিল। এবং রাতারাতি শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণাবর্ত থেকে অতি গভীর নিম্ন চাপে পরিণত হয়েছিল যা প্রায় ঘূর্ণিঝড়ের সমতুল্য। এই ঘূর্ণিঝড় সদৃশ অতি গভীর নিম্নচাপ পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন অঞ্চলের ওপর ব্যাপক তাণ্ডব চালায় দশই অক্টোবর এবং ১১ই অক্টোবরের আশেপাশে ঝাড়খণ্ডের দিকে সরে যায়। মাত্র ২৪ ঘন্টার তান্ডবেই দক্ষিণ ২৪ পরগনা উত্তর 24 পরগনা কলকাতা হাওড়া হুগলি, জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এবং উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বয়ে যায়। সিস্টেমটি সুন্দরবন অঞ্চলের উপর দাঁড়িয়েই ২৪ ঘন্টার মধ্যে এত শক্তিশালী হয়ে ওঠা সত্যিই আশ্চর্যজনক বিষয় এই শক্তিশালী নিম্নচাপটি সর্বনিম্ন ৯৯৬ মিলিবার বায়ুর চাপ নেমেছিল। দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয় এবং তছনছ করে দেয়, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ অঞ্চল যেহেতু সিস্টেমটি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার উপর দাঁড়িয়েই সর্বোচ্চ শক্তি বাড়িয়েছিল তাই সিস্টেমটি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ওপরেই সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি চালায়। তবে আশার কথা এই শক্তিশালী নিম্নচাপটি এমনই সময় তৈরি হয়েছিল যখন দুর্গাপুজোর ও লক্ষীপূজো শেষ হয়ে গিয়েছিল। তবে ২০১৭ সালে কালী পূজার সময় ফের উড়িষ্যা উপকূলে আছড়ে পড়েছিল আরেকটি শক্তিশালী নিম্নচাপ এই নিম্নচাপের প্রভাবে ওড়িশা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছিল। ২০১৭ সালের ১০ই অক্টোবর তৈরি হওয়া সুন্দরবন অঞ্চলের ওপর শক্তিশালী নিম্নচাপ টির সর্বোচ্চ বাতাসের গতি ৫৫ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা থাকলেও বাস্তবিক ক্ষেত্রে দমকা হওয়ার ঝাপটা ৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছিল যার জন্যই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি চলেছিল দক্ষিণবঙ্গের উপকূলীয় অঞ্চলে তবে সে বছরটিতে দুর্গাপুজো লক্ষ্মী পূজা শেষ হয়ে গেলেও ২০২৪ সালে ১০ই অক্টোবর দুর্গাপূজো শুরু হতে চলেছে, দুর্গাপূজার সপ্তমী পড়েছে ১০ই অক্টোবর তাই এ বছর পূজোতে গভীর নিম্নচাপের সম্ভাবনা একটা থেকেই যাচ্ছে প্রাথমিকভাবে বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের ঘূর্ণিঝড়ের ইতিহাস ঘাটলে।
Weather of West Bengal
7/8/2024
No comments:
Post a Comment